বানের পানিতে ভেসে গেছে ৮ কোটি টাকার মাছ-চিংড়ি-কাঁকড়া
সাতক্ষীরায় ভেঙে গেছে খোলপেটুয়া নদীর উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ। পানির স্রোতে ভেসে গেছে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের মাছের ঘের ও কাঁকড়া খামার। বাঁধ ভাঙার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো বাঁধ মেরামত করা যায়নি। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বাঁধ ভেঙে পানিতে ভেসে গেছে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর চিংড়ি ও কাঁকড়া খামার। এর মধ্যে পুকুর রয়েছে ১০০টি। চিংড়ি, কাঁকড়া, সাদা মাছ, মাছের পোনাসহ আনুষঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ টাকার।
বিজ্ঞাপন
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা প্রস্তুত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তালিকা প্রস্তুত সম্পন্ন হলে সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রণোদনার চেষ্টা করবেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকায় ১৫০ ফুট উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে চলে গেছে। বৃহস্পতিবার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করলেও তীব্র বেগের কারণে এখনো সেটি মেরামত করা যায়নি। প্লাবিত হয়েছে ইউনিয়নের পূর্ব দূর্গাবাটি, পশ্চিম দূর্গাবাটি, মাদিয়া, আলপাঙ্গাসিয়া, বিলাই, কলবাড়ি, রুপোরগাতি, পূর্ব পোড়াকাটলা ও পশ্চিম পোড়াকাটলা ৯টি গ্রাম।
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, নদীর জোয়ারের পানির তীব্র স্রোতের কারণে বাঁধটি এখনো মেরামত করা যায়নি। তবে দুই পাশে আমরা বাঁশ দিয়ে কিছু রিংবাঁধ তৈরি করেছি। পানির স্রোত যদি কমে তবে আগামীকাল (সোমবার) বাঁধে মাটি-বালুর বস্তা ফেলে মেরামতের চেষ্টা করা হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। মানুষের ঘের ভেসে গেছে। খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। চার দিক প্লাবিত থাকায় রান্নার জায়গাটুকুও অবশিষ্ট নেই। রান্না করতে না পেরে অনেকে খেতে পারছে না।
বাঁধ মেরামতের বিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ম্যাসেজ পাঠালেও সাড়া মেলেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল খুলনার প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম তাহমিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি মেরামত করতে সব ধরনের চেষ্টা করছি। আমাদের কর্মীরা রাতদিন কাজ করছেন। জোয়ারের পানির বেগের কারণে কাজটি বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাঁধটি মেরামত করা যাবে।
আকরামুল ইসলাম/এসপি