মনু প্রকল্পের কাসিমপুর পাম্প সব সময় না থাকায় মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরে পানি বেড়ে চলেছে। ফলে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। 

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) জেলা প্রশাসকের ২৪ ঘণ্টা পাম্প সচল রেখে ওই হাওরের পানি কমানোর দাবিতে কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। 

জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে মনু প্রকল্পের কাউয়াদীঘি হাওরের বোরো ফসলে প্রয়োজনে পানি সেচ দিতে ও বর্ষা মৌসুমে হাওরের বর্ধিত পানি বের করে দেওয়ার জন্য ১৯৮২ সালে কুয়েত এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে রাজনগরের কাসিমপুরে পাম্প হাউজ স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে কাউয়াদীঘি হাওরে বোরো ও আমন ফসল বন্যা কিংবা খরায় নষ্ট হচ্ছে না।

বৃষ্টিপাতের ফলে সম্প্রতি কাউয়াদীঘি হাওরে প্রতিদিন পানি বাড়ছে। এতে সদর উপজেলার একাটুনা, আখাইলকুঁড়া ও রাজনগর উপজেলার ফতেপুর, উত্তরভাগ, পাঁচগাঁও এবং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের হাওরপাড়ের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভুক্তভোগী মানুষের চলাচলের রাস্তাসহ ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি জলমগ্ন হচ্ছে। কিন্তু মনু প্রকল্পের কাসিমপুর পাম্প ২৪ ঘণ্টা সচল না থাকায় হাওরের পানি বৃদ্ধি থামছে না। 

নিরবিচ্ছিন্নভাবে পাম্প হাউজের ৮টি পাম্প সচল রেখে পানি সেচ দিয়ে কুশিয়ারা নদীতে ফেলার দাবিতে হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। 

স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন হাওর রক্ষা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মঈনূর রহমান মগনু, সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ চৌধুরী, সাংবাদিক জাবেদ ভূঁইয়া, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন ও সম্পাদক রাজন আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ প্রমুখ। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) এম এ হান্নান খান বলেন, চাহিদামতো বিদ্যুৎ যোগান না পাওয়ায় দিনে একটি পাম্প ও রাতে সব ক’টি পাম্প সচল রেখে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সমস্যা না থাকলে দিন-রাত সব সময় পাম্প সচল রাখা সম্ভব হতো। 

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, জরুরি মিটিংয়ে থাকায় এখনও স্মারকলিপি আমার হাতে পৌঁছেনি। হাওর রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে সব সময় পাম্প সচল করে হাওরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। 

ওমর ফারুক নাঈম/এমএএস