নওগাঁর মান্দা উপজেলায় বকেয়া ছয় মাসের ভাতার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অসহায় বয়স্ক, বিধবা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের সাবাইহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তারা মানববন্ধন করেন।

মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অসহায় ভাতাভোগীরা এ আয়োজন করেন। এ সময় তারা বদলি হওয়া সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের অবহেলার কারণে ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন। তারা তার শাস্তির দাবি ও বকেয়া ভাতার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

ভাতাভোগী উপজেলার বাংড়া গ্রামের কছিমুদ্দীন চৌকিদার ও ফাতেমা বিবি, চন্দ্রকোনা গ্রামের শামসুল আলম, সিংগা গ্রামের করপুল বিবি, তেঁতুলিয়া গ্রামের খতেজা বিবি ও কেশবপুর গ্রামের জাহানারা বেগম তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

ফাতেমা বিবি বলেন, আগে আমরা বইয়ের মাধ্যমে টাকা পেয়েছি, কোনো সমস্যা হয়নি। সে সময় আমাদের কোনো সমস্যা হলে মেম্বার, অফিস ও ব্যাংকের লোকজন মিলে ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু মোবাইলের মাধ্যমে টাকা দেওয়া শুরু হবার পর থেকে সমস্যার সৃষ্টি হয়। অফিসে অনেকবার অভিযোগ করেও আমরা টাকা পাচ্ছি না।

তেঁতুলিয়া গ্রামের খতেজা বিবি বলেন, আগে আমি নিয়মিত ভাতা পেয়েছিলাম। গত ছয় মাস কোনো ভাতা পাইনি। মোবাইলে টাকা দেওয়া শুরু হলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরে অনেকে টাকা পেয়েছেন। তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৪৯ জন ছয় মাসের ভাতা এখনো পায়নি। সমাজসেবা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে আমরা ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তাঁর শাস্তির দাবি করছি।

জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ভাতা দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ১৪৯ ভাতাভোগী ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসের ভাতা এখনো পাননি। সে সময় ভাতার দাবিতে সমাজসেবা অফিস ঘেরাওসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের টাকা ব্যাংক থেকে ফেরত চলে গেছে। সে ক্ষেত্রে বকেয়া ভাতার টাকা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এ বিষয়ে আর কিছু করতে পারব না।

বর্তমানে রাজশাহী ‘ছোটমনি’ নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক ও তৎকালীন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নওগাঁ জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২০ সালে মোবাইলের মাধ্যমে প্রথম ভাতা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে। সে সময় অনেকেই মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। নম্বর ভুল কিংবা বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। কিন্তু পরে যারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাদের ভুলগুলো ঠিক করে এখন ভাতা নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ওই সময় যারা ভাতা পাননি, তাদের আর সেই ছয় মাসের ভাতা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পরে এমন কোনো সমস্যা যেন আর না হয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলব।

এনএ