রংপুরের কাউনিয়াতে স্কুলছাত্রী সানজিদা আক্তার ইভা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নাহেদুল ইসলাম সায়েম (২০) ও শেখ মনিরুজ্জামান প্রিন্স এবং মেহেদী হাসান পলাশের (২২) দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ওই তিনজনকে কাউনিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আমলি আদালতে নেওয়া হয়। 

সেখানে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী ও কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিমুর রহমান। বিচারক তাদের দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।  

এর আগে রোববার (২১ আগস্ট) রাতে পীরগাছা উপজেলার ছোট কল্যাণী গ্রাম থেকে মেহেদী হাসান পলাশকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পলাশ ওই গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সর্ম্পকের দ্বন্দ্ব থেকে সায়েম, প্রিন্স ও পলাশ নামে তিন যুবক মিলে গত ১৬ আগস্ট স্কুলছাত্রী সানজিদা আক্তার ইভাকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর বাবা ইব্রাহিম খান বাদী হয়ে মামলা করেন।

পুলিশ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি নাহেদুল ইসলাম সায়েমকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে। সায়েম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় আরও দুইজন জড়িত রয়েছে বলেও জানান।  সায়েমের তথ্যের ভিত্তিতে শেখ মনিরুজ্জামান প্রিন্স নামে আরেক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল (রোববার) রাতে জড়িত অপর যুবক পলাশকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম সায়েম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের তাশুক উপাশু গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নুর হোসেনের ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

অন্যদিকে হত্যার শিকার সানজিদা আক্তার ইভা কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের গোড়াই গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী পীরগাছা উপজেলার বড়দরগাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

এ বিষয়ে জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম পলাশ বলেন, ত্রিভুজ প্রেমের বলি হতে হয়েছে দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে। এ ঘটনায় পূর্বে দুজন এবং রোববার আরেক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত আসামি সায়েম, প্রিন্স ও পলাশের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার আরও কারণ জানা যাবে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় সানজিদা। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাউনিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। 

নিহত শিক্ষার্থীর গলায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৮টি জখমের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন।  

 ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই