ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকের স্বপ্ন ফেটে চৌচির
শ্রাবণের শেষ সপ্তাহ চলছে। বর্ষাতেও বৃষ্টির দেখা নেই। আমন ধান রোপণ করতে হচ্ছে সেচ দিয়ে। কেউ কেউ বৃষ্টির আশায় থেকে হয়েছেন নিরাশ। শেষ পর্যন্ত সেচ দিয়েই আমন রোপণ করছেন কৃষকরা। এর সঙ্গে সার ও ডিজেলের চড়া দামের কারণে কৃষকদের যেন নাভিশ্বাস উঠেছে। কোনোভাবে রোপণ শেষ হলেও অনাবৃষ্টির কারণে জমির সঙ্গে কৃষকের স্বপ্নও ফেটে চৌচির।
ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান রোপণের পর বৃষ্টি না হওয়ায় মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বৃষ্টির অভাবে আমনের চাষাবাদ সেচ নির্ভর হয়ে পড়ছে। ইউরিয়া সার প্রতি কেজিতে ৬ টাকা ও ডিজেল লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ায় আমনের উৎপাদনে খরচ পড়ছে প্রায় দ্বিগুণ। দিনমজুরি ও হালচাষের খরচও বেড়েছে। উৎপাদন খরচ উঠাতে পারবেন কি-না এ নিয়ে চিন্তিত কৃষক। অনেকে কৃষি থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবছেন। পুরোপুরি কৃষি নির্ভর প্রান্তিক কৃষকরা দিশেহারা।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার মিলনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, বছরের এ সময় বৃষ্টির পানিতে ক্ষেতগুলো ভরপুর থাকতো। অথচ এবার রোদ চৈত্রের চেয়ে বেশি। ক্ষেত শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। আমন ধানের চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার আমাদের লোকসান হবে।
রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর গ্রামের কৃষক সলেমান আলী বলেন, এবার আমন ধানে লাভের সম্ভাবনা তো নেই-ই, উল্টো লোকসান হবে নিশ্চিত। সেচের জন্য ডিজেল কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার সার কিনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। তাও সারের সংকট।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার রহিমানপুর গ্রামের বর্গাচাষি পারভেজ বলেন, অন্যের জমিতে চাষাবাদ করি। এখন ডিজেল, ইউরিয়া সার, দিনমজুরি সবকিছুরই দাম বেশি। মনে হচ্ছে এবার আমি সর্বশান্ত হয়ে যাব। আর ফসলের দাম না বেড়ে আগের মতো থাকলে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এরইমধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে রোপন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৯৮.৯৪ শতাংশ জমিতে রোপণ হয়েছে। এবার বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। তবে আমরা সেচ মেশিন সরবরাহ করেছি। কৃষির প্রয়োজনীয় অনেক কিছুর দাম বাড়ায় কৃষকদের যান্ত্রিক মেশিনে কাজগুলো করার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে আমরা ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছি।
এম এ সামাদ/এমএএস