রংপুরের কাউনিয়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আমিনুল ইসলাম বাবুল নামে এক স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আমিনুল ইসলাম বাবুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশি পাহারায় রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, কাউনিয়া উপজেলার বাজেমসকুর গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে আমিনুল ইসলাম বাবুল ঢাকায় একটি পোষাক কারখানায় কাজ করতেন। সেখানে আম্বিয়া খাতুন ওরফে লতার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

কিছুদিন ঘর-সংসার করার পর আসামি বাবুল তার স্ত্রীকে না জানিয়ে গোপনে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই স্ত্রী লতা তার স্বামীর খোঁজে রংপুরে বাবুলের বাড়িতে আসেন। গ্রামে এসে জানতে পারে তার স্বামী বাবুল তাকে বিয়ে করার পূর্বে আরেকটি বিয়ে করেছেন। সেই সংসারে তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তারপরও লতা তার স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করেন। এ ঘটনার একদিন পর ২৬ জুলাই লতাকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার স্বামী বাবুল।

পরদিন সকালে খবর পেয়ে পুলিশ এসে নিহত গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে রংপুরে এসে নিহতের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি আমিনুল ইসলাম বাবুলকে দোষী সাব্যস্ত করে বিজ্ঞ বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নয়নুর রহমান টফি জানান, নিহতের পরিবার ন্যায় বিচার পেয়েছে। তারা এ রায়ে সন্তুষ্ট। অপরদিকে আসামীপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন জানান, আসামি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। রায়ের কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই