দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে যান ধীরেনের স্ত্রী। সেখান থেকে সবাই মিলে মহালয়া দেখতে যান তারা। নৌকাডুবিতে ধীরেনের দুই মেয়েসহ পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়। 

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কাজলদিঘী গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন চন্দ্র (৫০)। গত রোববার করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে ভয়াবহ নৌকাডুবিতে জোতি (২) ও জয়া (৪) নামে দুই মেয়েকে হারিয়েছেন তিনি। 

প্রথম দিনেই ছোট মেয়ে জ্যোতির মরদেহ পেলেও ৫ দিনেও খোঁজ মেলেনি বড় মেয়ে জয়ার। ছোট মেয়ের সৎকার করার পর বড় মেয়ের খোঁজে আউলিয়া ঘাট থেকে ইউনিয়ন পরিষদ আর পরিষদ থেকে ঘাটে পাঁচ দিন ধরে ছুটছেন ধীরেন চন্দ্র। নিজ হাতে বড় মেয়ের মরদেহ সৎকার করতে চান তিনি। 

করতোয়ায় আউলিয়া ঘাট থেকে বদ্বেশরী ঘাটে মহালয়া দেখতে যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। 

ধীরেন্দ্র চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই মেয়েসহ স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চারদিন আগে বেড়াতে যান। সেখান থেকেই তারা মহালয়া দেখার জন্য বের হয়েছিল। সঙ্গে আমার শ্যালিকা ও শাশুড়িসহ সাতজন ছিল। সাতজনের মধ্যে আমার স্ত্রী আর শ্যালিকা বেঁচে ফিরে এসেছেন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে আমার ছোট মেয়েসহ চারজনের মরদেহ পেয়েছি। ছোট মেয়ের সৎকারও করেছি। এখনও বড় মেয়ের কোনো খোঁজ পাইনি। ঘটনার দিন থেকে ঘুরছি। কোনো কিছু খেতে পারছি না। খেয়ে না খেয়ে সময় পার হয়ে যাচ্ছে আমার।

তিনি বলেন, হোক মৃত, তবু আমার মেয়েকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিন। আমার সব শেষ হয়ে গেল। কী নিয়ে বেঁচে থাকব আমি। আমার বড় মেয়েকে আমার হাতে ফিরিয়ে দিন। 
 
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনও তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলমান।

এমএএস