বগুড়ায় সাবেক স্ত্রীকে হত্যার ২৬ বছর পর স্বামীসহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মন্ডল এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার শেরপুর উপজেলার পালসন গ্রামের মৃত আরিফ উল্ল্যাহ ফকিরের ছেলে জিল্লুর রহমান, মৃত জহুরুল ইসলামের ছেলে গোলাপ হোসেন ও খারতাপাড়ার মফিজ উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ মন্ডল। 

নিহত গৃহবধূর নাম চায়না খাতুন। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাপ হোসেনের সাবেক স্ত্রী। 

বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) নাছিমুল করিম হলি। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে বাবার অমতে চায়নাকে বিয়ে করেন গোলাপ। তারা শেরপুরের মির্জাপুরে বসবাস করছিলেন। সম্পর্কের বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের এক বছর পর বিচ্ছেদও হয়। কিন্তু তালাক হলেও চায়না ও গোলাপের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। বিষয়টি নিয়ে গোলাপকে তার পরিবার চাপ সৃষ্টি করে। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখানো হয়। এসব কারণে গোলাপ চায়নার সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে বিচ্ছিন্ন করতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ রাতে উপজেলার পালশান গ্রামে চায়নাকে ডেকে নিয়ে আসে গোলাপ। এ সময় গোলাপকে সহযোগিতা করার জন্য জিল্লুর ও ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গল্প করার সুযোগে চায়নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে তারা। 

এরপর তারা চায়নার মরদেহ ওই গ্রামের এক বাড়ির সেফটিক ট্যাংকের ভেতরে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর গ্রামবাসী মরদেহ উদ্ধার হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে চায়নার পরিবার মরদেহ শনাক্ত করে। ওই দিনই তার ভাই হাফিজার রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। 

সেই মামলায় দুই বছর পর জুন মাসে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে শুনানি চলে। এর মাঝে মামলার আরেক আসামি গোলাপের বাবা জহুরুল হক মারা যায়। দীর্ঘ ২৬ বছর পর আজ বুধবার মামলার ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও এপিপি নাছিমুল করিম হলি বলেন, দীর্ঘ দিন পর হলেও একজন গৃহবধূ ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই রায়ে আমরা খুশি। 

আলমগীর হোসেন/এসপি