শতবর্ষী বৃদ্ধের বয়স ৫০, পাচ্ছেন না সরকারি সুযোগ-সুবিধা
হামার (আমার) স্বামী বয়স ১০০ বছরের বেশি। কিন্তু তার ভোটার আইডি কার্ডে বয়স ৫০ বছর। এজন্য বয়স্ক ভাতা পায় না। হামার এই গ্রামটাত হামার স্বামী প্রবীণ। কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মাঝের চর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর স্ত্রী মানিক মতি (৬০)।
তিনি বলেন, হামার স্বামীর অনেক বয়স হইছে। ঠিকমতো চলতে পারে না। বয়স ঠিকঠাক করার জন্য কয়েক দিন ইউনিয়ন পরিষদ গেছি। কোনো পাত্তা পাই নাই। সরকার নাকি সবাইকে বয়স্ক ভাতা দিছে। হামার স্বামীর কপালে তা জুটল না। ভোটার আইডি কার্ড ঠিক হইতে হইতে কোনো দিন বেন (যেন) স্বামী মোর (আমার) মরি যায়।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়াহেদ আলী সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মাঝের চর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পাঁচ ছেলে-মেয়ের জনক। প্রথম স্ত্রী মারা গেছে। ওই গ্রামের একমাত্র শতবর্ষী ব্যক্তি তিনি। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ দেওয়া হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স মাত্র ৫০ বছর। তার স্ত্রী মানিক মতিরও জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বয়স ৬০ বছর। তার বয়স দেওয়া হয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯৬২। স্ত্রী স্বামীর চেয়ে ১০ বছরের বড়। তবে তাদের অভিযোগ, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকার কারণে তারা পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা।
স্থানীয় নজরুল ইসলাম বলেন, ওয়াহেদ চাচা খুবই গরিব। অনেক কষ্ট করে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। আর এক ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। তার বয়স ১০০ বছরের বেশি। তবে এনআইডি কার্ডে তার বয়স ৫০ বছর। বয়স কম হওয়ার কারণে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না তিনি।
বিজ্ঞাপন
শফিকুল নামে আরও একজন বলেন, ওয়াহেদ আমার সম্পর্কে ভাই হয়। তার বয়স ১০০ বছরের ওপরে। সরকারি কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। তার স্ত্রী এনআইডি কার্ড নিয়ে সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে অনেক বার গেছেন কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রায়হান মন্ডল বলেন, ওয়াহেদ আলীর বয়স ১০০ বছরের বেশি। তার এনআইডিতে যে বয়স কম আমার জানা নেই। আর তারা আমার কাছে কোনো দিন আসেও নাই।
কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম রাকিব বলেন, এনআইডি ডাটাবেজে কোনো তথ্য যদি ভুল আসে, তাহলে প্রয়োজনীয় কাজপত্র দিয়ে আবেদন করলে যাচাই করে সংশোধনের সুযোগ আছে।
জুয়েল রানা/এসপি