যশোরে ৭০০ পরিবারের বৈদ্যুতিক সংযোগ বাঁশ ও গাছের খুঁটিতে
যশোর শহরতলীর ধর্মতলার একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা খ্রিষ্টান মিশনপাড়া ও গাজীপাড়া। এ দুই পাড়ায় প্রায় ৭০০ পরিবারের বসবাস। আর এখানে বাঁশ ও গাছ দিয়ে এসব পরিবারকে বিদুৎ সংযোগ দিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।
এমন জরাজীর্ণ এবং জোড়াতালির অবস্থার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বৈদ্যুতিক লাইন সংস্কার করতে পারেনি।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার জনপ্রতিনিধি, বিদুৎ অফিসে ধর্ণা দিয়ে এবং বিভিন্ন সময়ে আবেদন করেও মেলেনি এর সুরহা। তবে বিদুৎ বিভাগ বলছে, নতুন প্রকল্প না আসায় এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে খ্রিষ্টান মিশনপাড়া ও গাজীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ইটের সলিংয়ের রাস্তার ধার দিয়েই বাঁশের খুঁটি পুঁতে ঝোলানো হয়েছে বিদ্যুতের তার। তারের জটলার ভার সইতে না পেরে কোথাও কোথাও বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। আবার কোথাও হেলে থাকা বাঁশ ঠেকনা দেওয়া হয়েছে আরেকটি বাঁশ দিয়ে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। এখানকার অনেকের ঘরের টিনের ওপর দিয়ে অন্য পরিবারে সংযোগ টানা হয়েছে। ফলে প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে জীবনের ঝুঁকির মধ্যে বসবাস ও চলাচল করতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য জনপ্রতিনিধি, বিদুৎ অফিসে ধর্না দিলেও সুরহা মেলেনি এ সমস্যার। বিদুৎ লাইনের এমন জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় গত এক যুগ ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। দ্রুত লাইন সংস্কার না করলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ওই এলাকার জাকির হোসেন নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা চলতে ফিরতে আতঙ্কে থাকি। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাঁটার সময় একটা তার খুলে পড়ে যে কারও মৃত্যু হতে পারে। আর কতদিন এভাবে বাশঁ খুঁটি দিয়ে রাখবো।
সামিয়া খাতুন নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, বৃষ্টির সময় যখন আমরা স্কুলে যাই তখন আমরা ভয়ে ঘরের দেওয়ালে স্পর্শ করতে ভয় পাই। বৃষ্টি হলেই এ সকল তারে আগুন জ্বলে ওঠে। কখনো কখনো ঘরের বেড়া ধরলেও শক করে।
গীতা বিশ্বাস নামে এক নারী বলেন, আমরা একাধিকবার বিদুৎ অফিসে গিয়ে আবেদন করেছি। তারা দেখছি দেখছি করে ১২ বছর পার করে দিয়েছে। তাদের এখনও এ সমস্যা দেখা শেষ হলো না।
এদিকে, চলতি মাসেও যশোর ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে এলাকাবাসী। ৩০৪ জনের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে এলাকাবাসীর ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের কথা উল্লেখ করে দ্রুত বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানোর দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমানে কোনো প্রকল্প নেই। পরবর্তীতে প্রকল্প এলে এ মহল্লার বৈদ্যুতিক খুঁটির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ওই এলাকাবাসীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যশোর ওজোপাডিকোর আওতায় নতুন কোনো প্রকল্প না থাকায় আমরা সেখানকার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান করতে পারছি না। আগামীতে নতুন প্রকল্প আসলে কাজ শুরু করা হবে।
এমএএস