ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মৌলভীবাজারের হাওর এলাকায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এক রাতের ঝোড়ো বাতাসে হেলে পড়েছে আমন ধানের গাছ। এতে জমিতে জমে থাকা পানিতে নষ্ট হচ্ছে ধানের শীষ। আমন ধানের ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার হাইল হাওর, কাউয়াদিঘি ও হাকালুকি হাওরের কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাওরজুড়ে এখন সবুজ আর সোনালী মিশ্রিত ধান। এর‌ মধ্যে অধিকাংশ জমির ধানগাছ হেলে পড়েছে। আর এক মাসেই পেরুলেই আমন ধান ঘরে তোলা শুরু হবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বয়ে যাওয়া এক রাতের ঝোড়ো বাতাসে আমন ধানের গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। বিশেষ করে গাছপালা সংলগ্ন ক্ষেত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ক্ষেতেই পাকা ধান ভেঙে পড়েছে।

একদিকে পোকার আক্রমণ, সার ও বীজের উচ্চমূল্যে লোকসানের মুখে ছিলেন চাষিরা। এই অবস্থায় ঝাড়ো বাতাসে ধানের গাছ পড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা 

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস বলছে, এ বছর জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। 

সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের কৃষক মোত্তাকিন বলেন, এমনি সারের দাম বেশি, কীটনাশকসহ ধান চাষ করতেই এবার অনেক খরচ হয়েছে। আসল উঠবে কিনা তা বলা মুশকিল। তার ওপর পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় ঝড়ে ধানগাছ পড়ে যাওয়ায় এবার চরম ক্ষতি হবে। 

রাজনগর উপজেলার বাজুয়া গ্রামের ইয়াবর মিয়া বলেন, ধানগাছের নিচে এক ধরনের ছোট বাদামী ফড়িং আক্রমণ করে। এরপর থেকে ধান গাছে পচন শুরু হয়। আমার ৫ বিঘা জমির ধান একেবারে নষ্ট গেছে। এর মধ্যে রাতের ঝোড়ো বাতাসে আরও ধান নষ্ট হয়ে গেল। 

একাটুনা ইউনিয়নের রাজন আহমদ বলেন, আমাদের এলাকায় আফালের কারণে হাওরের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। কৃষক এখন ধান চাষ করে এমনিতেই লাভবান হয় না। এর মধ্যে এখন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অনেক ধানগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। 

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। ঝোড়ো বাতাসে ধান গাছগুলো নুয়ে পড়েছে। আমন এখনো পরিপক্ক হয়নি। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল। যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আমরা চেষ্টা করছি কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা বের করতে। 

ওমর ফারুক নাঈম/আরএআর