রংপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে নগরীর ছাত্রাবাসগুলোতে পুলিশি তল্লাশির মাধ্যমে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে পুলিশের দাবি- হোটেলে অবস্থান নেওয়া লোকজনের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রাবাসে কোনো তল্লাশি চালানো হয়নি।

 এদিকে রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে নগরীর আবাসিক হোটেল ও বিভিন্ন ছাত্রাবাসে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা অবস্থান করছেন। পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা গণমাধ্যমকর্মীদের অনেকেই আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। এতে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সমাবেশ ঘিরে আবাসিক হোটেলগুলোতে চাপ বেড়েছে। তবে এ নিয়ে আবাসিক হোটেল ও ছাত্রাবাস মালিকরা মুখ না খুললেও সবখানে বাড়তি লোক সমাগম লক্ষ্য করার মতো।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়, মডার্ন মোড়, দর্শনা, সাতমাথা ঘুরে আবাসিক হোটেলগুলোতে একই চিত্র দেখা যায়। প্রত্যেকটি হোটেলেই ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভাড়া হয়েছে। যাদের অধিকাংশের বাড়ি রংপুরের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে।

নাম না প্রকাশের শর্তে আবাসিক হোটেলের ম্যানেজাররা জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে হোটেল বুকিং বেড়েছে। মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে থাকার জন্যে এসেছে। এতে ব্যবসা ভালো চলছে। তবে হঠাৎ করে কি কারণে হোটেলে চাপ বেড়েছে তা জানতে চাইলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে রংপুর নগরীর লালবাগ কলেজপাড়া, দর্শনা, রাধাবল্লভ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রাবাসগুলোতে (মেস) পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ধর্মঘট উপক্ষো করে রংপুরে এসেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছে প্রশাসন। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। শুধু সড়কে নয় নগরীর মেসগুলোতে বহিরাগতদের থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। অনেকে আবাসিক হোটেলগুলোতে বুকিং দিয়েছে, কিন্তু পুলিশের ভয়ে যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও আমরা গ্রেপ্তারের খবর পাইনি।

বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, হোটেলে অবস্থান নেওয়া লোকজনের খোঁজ নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের নিয়মিত কাজ। এটি আমরা সংগ্রহ করি এবং হোটেল মালিকগণ আমাদের জানান। আমরা কাউকে হয়রানি করছি না। অভিযোগ করতেই পারে, আমরা তো কাউকে ধরে নিয়ে আসিনি।

অন্যদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছি। সমাবেশ ঘিরে যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে, সেজন্য কয়েক দফায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

আরএআর