ইউপি সদস্যকে টাকা দিয়েও মেলেনি সরকারি ঘর
ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল
টাকা দিয়েও কপালে জোটেনি প্রাপ্য সরকারি ঘর। আবার মোটা অংকের টাকা দিয়ে সেই ঘর পেয়েছেন অন্যরা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের টাকা নিয়ে ঘর না দেওয়ার এমন অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ইউপি সদস্য ঘর ও টাকা না দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী মোরশেদা বেগমের পরিবার।
জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউপি পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। ভুক্তভোগী একই ইউনিয়নের সরদারপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় গত ১ নভেম্বর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেতে মোরশেদা ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুলের কাছে যান। তখন জাহাঙ্গীর তার কাছে ঘরের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। এতে ঘর পাওয়ার আশায় সুদে টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীরকে ৩০ হাজার টাকা দেন মোরশেদা। এরপর প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ পেরিয়ে গেলেও কোনো ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় টাকা ফেরত চান তিনি। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে গত তিন মাস ধরে টালবাহানা করছেন জাহাঙ্গীর। ঘর ও টাকা কোনটিই না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভূমিহীন পরিবারটি।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগীর স্বামী আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাহাঙ্গীর মেম্বার এক লাখ টাকা চেয়েছিলেন। অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা দিয়ে এখনও ঘর পাচ্ছি না। আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। মোবাইলে এ-সংক্রান্ত কথাবার্তার রেকর্ডিং আছে। অথচ টাকার বিনিময়ে অনেক সচ্ছল পরিবারকেও ঘর দেওয়া হয়েছে। এমনকি একই পরিবারের দুজনকেও ঘর দিয়েছেন মেম্বার।
বিজ্ঞাপন
মোরশেদা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুদে উপর টাকা ধার নিয়ে তাকে দিয়েছি। তবুও ঘরও পেলাম না এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। বৃহস্পতিবার রাতে চেয়ারম্যান ফোন করে বলে যে টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু কবে ফেরত তা বলে নাই।
ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল বলেন, ঘর দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। আনোয়ার পোড়ারহাট বাজারের দোকান নিতে টাকা দিয়েছে। সে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আমার প্রতিপক্ষরা অহেতুক হয়রানি করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর শুধুমাত্র অসহায় ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দ। ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা অবশ্যই তদন্ত করা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর সাথে জড়িত কেউই পার পাবে না।
শরিফুল ইসলাম/আরকে