জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন
জয়পুরহাটে ১৭ বছর আগে এনামুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে বাবা-ছেলেসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নূর ইসলাম এ আদেশ দেন। মামলার তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া চারজনের মধ্যে একজন অনুপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদশা ইউনিয়নের পন্ডিতপুর গ্রামের মৃত কুড়ানোর ছেলে রমজান আলী, তার ছেলে মো. রঞ্জু ও শাহীন আলম এবং একই গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে হান্নান ।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার মোস্তফার ছেলে শাহাদত, কোরবান আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর এবং সোলায়মান আলীর ছেলে আলীম।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৫ ফ্রেব্রুয়ারি জয়পুরহাট সদর উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের একমাত্র ছেলে এনামুল হক সন্ধ্যা ৬টার দিকে পার্শ্ববর্তী বজরপুর গ্রামে ভগ্নিপতির বাড়িতে পাওয়ার টিলার নিতে যান। সেখানে থাকার পর ভোররাতে পাওয়ার টিলার পৌঁছে দেবে বলে তার ভগ্নিপতি আবু বকর ভাদসা বাজার পর্যন্ত এনামুল হককে এগিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান।
এদিকে রাত হলেও এনামুল বাড়ি ফেরেননি। পরদিন ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে এনামুলের বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ গজ দূরে এক কৃষক ভোরে মাঠে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পান চারজন লোক মাঠের মধ্যে কিছু ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। পরে ওই কৃষক সেখানে গিয়ে আলুর ক্ষেতে এনামুল হকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরেদহ উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে জয়পুরহাট থানায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সহযোগীদের নামে হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম আকন্দ এজাহার নামীয় একজনের নাম বাদ দিয়ে ২০০৫ সালের ৪ মে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, আদালতে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটির রায় দেওয়া হয়েছে। রায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। একই মামলার তিন আসামির নামে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামি রঞ্জু পলাতক রয়েছেন।
চম্পক কুমার/আরএআর