এই ডিসেম্বরে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিজয় পতাকা তুলে ধরবে : দুদু
শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ঢাকায় সমাবেশ করতে ২৬টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর যতো এগিয়ে আসছে সরকারের মন দুরু দুরু কাঁপছে। সরকারের সময় শেষ। পদত্যাগ করুন। এই ডিসেম্বরে হানাদার বাহিনীকে আমরা পরাজিত করেছি। এই ডিসেম্বরে গণতন্ত্রের বিজয় পতাকা উড়িয়েছিলাম। এই ডিসেম্বরে বাংলাদেশিরা মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করেছিল। এই ডিসেম্বরে বিএনপি কর্মীরা বিজয় পতাকা তুলে ধরবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর কেডি ঘোষ রোডের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। পুলিশের মামলা, নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের অভিযোগ তুলে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগর বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে বড় নেতার বিপদেও কেউ এগিয়ে আসে না। আপনারা যখন দেখবেন পার্টি ক্ষমতায় নেই, সরকারও নেই, তখন কোথায় যাবেন? তখন কী হবে? মানুষ এখন ঘরে থাকতে চায় না। এই সরকারের হাত থেকে মানুষ এখন মুক্তি চাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্বাসযোগ্য লাভজনক ব্যাংক ছিল ইসলামী ব্যাংক। এক বছরের মধ্যে একেবারে ফাঁকা করে ফেলল। উদ্যোক্তা যারা ব্যাংক বানিয়েছিল, তারাও এই ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সব ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা এদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। সরকারের মন্ত্রী আছে, পুলিশ আছে মিলিটারি আছে, তবু ব্যাংকে টাকা থাকে না। টাকার অভাবে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা যাচ্ছে না। দুর্ভিক্ষ দেখা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। তেল আমদানি করা যাচ্ছে না। বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
বিজ্ঞাপন
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, কী অপরাধে বিএনপি কর্মী জিকোকে হত্যা করা হয়েছে। এক এক করে ১০টা মানুষকে মেরে ফেললেন। ১৫ বছর ক্ষমতায় আছেন, খায়েশ এখনও মেটেনি। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে বাস, লঞ্চ, ট্রলার বন্ধ করেছে। তবুও হুঁশ হয়নি। মানুষের এখন বাস, লঞ্চ, ট্রলার লাগে না। তারা হেঁটে না হলে সাঁতরে আসে। খালেদা জিয়ার শাসননামলে ১৬ টাকা কেজির চাল থেকে এখন ৭০ টাকা। এই সরকার ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা বলে এখন ৭০ টাকায় খাওয়াচ্ছে। আটা, চিনি ঠিকমতো পাওয়া যায় না। কখনও কখনও বাজার থেকে শিশু খাদ্যও উধাও হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একজন কৃষক কষ্ট করে ক্ষেতের ফসল ফলায়। অথচ ২৫ হাজার টাকার জন্য কৃষকদের জেলে দিয়েছেন। আর লক্ষ্য হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে পাচার করছে তাদের কোনো বিচার করলেন না? এ কেমন বাংলাদেশ।
পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের জন্য আপনারা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন। অথচ আপনারা অহেতুক গায়েবি মামলা দেবেন, আর কতো? আপনারা বাধা না দিলে ৩ ঘণ্টায় সমাবেশ শেষ করতাম।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, খুলনা বিএনপি কর্মী জিকোসহ নেতাকর্মীদের হত্যার বিচার করতে হবে। সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে। জনগণ জেগে উঠেছে। গায়েবি মামলা দিচ্ছে। এই সমস্ত গায়েবি মামলার ভয় বিএনপি পায় না। ১০ তারিখ ঢাকা পল্টনে ২৫ লাখ মানুষ সমাবেশে অংশ নেবে। নিরাপত্তার সাথে সমাবেশ করতে না দেওয়া হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। সমাবেশে মানুষ তিনদিন আগে আসছে। নয়াপল্টনে সমাবেশ করে দেখিয়ে দিব এই সরকারকে জনগণ চায় না। ঢাকা শহরে ১ ডিসেম্বর থেকে দেখিয়ে দেবো ঢাকা শহর বিএনপির দখলে। বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে থাকলেও সরকারের পতন ছাড়া বাড়ি ফিরবে না।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও বিএনপি নেতা শেখ সাদীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মনিরুল হাসান বাপ্পি, আবু হোসেন বাবু, জুলফিকার আলী জুলু, কাজী মাহমুদ আলী, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, শেখ তৈয়েবুর রহমান, মো. মুজিবর রহমান প্রমুখ।
মোহাম্মদ মিলন/আরকে