রাজশাহীতে এসএসসির খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবি শিক্ষার্থীদের
এসএসসির খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (পিএন) ও রাজশাহী কলেজিয়েটে স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। অভিভাবকদের দাবি তাদের সন্তানদের খাতাগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থী রিজুওয়ানা করিম বলেন, বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ের খাতার অবমূল্যায়ন। পরীক্ষকের মনগড়া নম্বর প্রদান। টানা ৬০-৭০ জনকে গড়ে একই নম্বর প্রদান। যা অগ্রহণযোগ্য। অনেক ভালো পরীক্ষা দেবার পরও ভালো স্টুডেন্টদের আশারূপ ফলাফল আসেনি। অথচ অনেক শিক্ষার্থী পূর্ণ নম্বর উত্তর না করেও ফলাফল পূর্ণ নম্বর পেয়েছে যা ভালো শিক্ষার্থীদের জন্য অবিচার। একই কক্ষে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে ১৮০-১৮৪ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে অন্যদের ২০০ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
অনেক যোগ্য শিক্ষার্থী খাতার এই অবমূল্যায়নের জন্য আজ ভালো কলেজে ভর্তির শঙ্কায় আছি। যেখানে তারা বরাবর ভালো রেজাল্ট করে এসেছে। যেখানে পূর্ববর্তী বছরগুলোতে আমাদের স্কুল থেকে ৭০ জনের বেশি রাজশাহী কলেজে ভর্তির নম্বর পায়। সেখানে এ বছর মাত্র ২০ জন পাওয়াই মুশকিল। তাই আমরা আমাদের কাঙ্খিত বা প্রাপ্ত ফলাফল পায়নি।
পিএন স্কুলের শিক্ষার্থী মোসা ইফফাত নাহিয়ান জানান, এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সমস্যা হয়েছে। যারা প্রথম ক্যাটাগরির শিক্ষার্থী তাদের। আমাদের পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল নগরীর লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলটির এক নম্বর রুমে ৫০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তারাই মূলত ভুক্তভোগী। আমাদের পরীক্ষার খাতাগুলো যে বান্ডিলে পড়েছিল শুধু তাদের সমস্যা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার খাতা সাধারণ রুম অনুযায়ী একটি বান্ডিল করা হয়- এই শিক্ষার্থীর দাবি।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো ১০০ তে ১০০ পেয়েছি সবগুলোতে। এটা কোনো সমস্যা না। সমস্যা হলো, বাংলা ও ইংরেজিতে।
বাংলা-ইংরেজি দুইটা মিলে রেজাল্ট দিয়েছে এক সঙ্গে। সমস্যাটা হচ্ছে সেখানে আমাদেরকে ১৫ থেকে ৩০ নম্বর কমিয়ে দিয়েছে। কারও কারও ৪০ নম্বরও কমিয়ে দিয়েছে। আর ওরা আমাদের থেকে ৩০ থেকে ৪০ নম্বর বেশি পেয়ে গেছে-এই চারটা বিষয় মিলে। এখন ওরা হচ্ছে রাজশাহীতে টপ পজিশেনে (স্থানে) চলে গেছে। আমরা চলে গেছি লো পজিশনে (নিচে)। এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
শিক্ষার্থীদের একজন অভিভাবক শরিফুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে। তাবে নম্বর খারাপ। তাই তারা রাজশাহী কলেজ ছাড়া ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে না। কিন্তু তাদের থেকে নর্মাল শিক্ষার্থীরাই ভালো ফলাফল করেছে। আমরা বিষয়টি শিক্ষাবোর্ডকে জানাতে এসেছি।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মঞ্জু রহমান খান জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাদের চেয়ে খারাপ শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করেছে। আমরা তাদের বলেছি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে এ বছর এসএসসিতে ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। এর আগে গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এমএএস
বিজ্ঞাপন