ফাইল ছবি

করোনার অতিমারি মোকাবিলায় দ্বিতীয় ধাপে বুস্টার ডোজ দেবে সরকার। সম্প্রতি দ্বিতীয় ধাপের বুস্টার ডোজ বা টিকার চতুর্থ ডোজ ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. শামসুল হক নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুসারে বরিশাল বিভাগে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। 

তবে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ গ্রহণকারীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলা-উপজেলা দপ্তরের কর্মকর্তারা। মানুষ টিকা নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও অবহিত করেছেন সিভিল সার্জনরা। তবে করোনার পরবর্তী ঢেউ মোকাবিলা করতে পূর্ব প্রস্তুতির জন্য আগে ভাগেই দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ শুরু করতে চায় সরকার। এজন্য প্রচার-প্রচারণাও শুরু করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হুমায়ূন শাহীন খান জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই বিভাগের সকল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর একযোগে বিভাগের ৪২টি উপজেলায় দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ প্রদান শুরু হবে।

তিনি জানান, প্রথম বুস্টার ডোজ বা টিকার তৃতীয় ডোজ নেওয়ার পর চার মাস অতিবাহিত হলে যে কেউ চতুর্থ ডোজ বা দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। টিকা কার্যক্রমে এর আগে যেসব স্থায়ী কেন্দ্র ছিল সেখানে টিকা দেওয়া হবে। অস্থায়ী কেন্দ্রে দেওয়া হবে না।

ডা. হুমায়ূন শাহীন খান বলেন, বিভাগের সকল টিকা কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এখনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়নি কত লোককে চতুর্থ ডোজ বা দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বিভাগের ৬ জেলায় এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে। সিভিল সার্জনবৃন্দের চাহিদাপত্রের অনুকূলে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে আরও টিকা পাঠানো হচ্ছে।

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, আমরা নির্দেশনা পেয়ে টিকাকেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। এখন পর্যন্ত বরিশাল জেলায় দেড় লাখ ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে। টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ধাপে ধাপে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ সকলেই পাবেন।

পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান জানান, দ্বিতীয় বুস্টার ডোজে ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। এখন আমাদের কাছে ৩৩ হাজার ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে।

ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. কে এম শফিকুজ্জামান বলেন, স্থায়ী ভ্যাকসিন কেন্দ্রের পাশাপাশি ইপিআই কেন্দ্রও সংযুক্ত করে নিয়েছি। ভোলায় ৩০ হাজার ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে। দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ শুরু হলে আরও টিকা পাব।

ঝালকাঠি জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, ১৪ হাজার ৯২৪ ডোজ টিকা এখন পর্যন্ত সংরক্ষিত রয়েছে।

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, জেলায় প্রথম বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৬ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ এখনই সম্ভবত ১৫ হাজার মানুষ নিতে পারবেন না সময়ের কারণে। অর্থাৎ প্রথম বুস্টার ডোজ অনেকেই নিয়েছেন এক দুই মাস আগে। ফলে চার মাস না হওয়ায় তারা হয়তো নিতে পারবেন না। তবে বরগুনায় এখন ৩৮ হাজার ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে।

পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাকিল সরোয়ার বলেন, ৩ হাজার ৩৫৪ ডোজ টিকা সংরক্ষিত রয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে আরও টিকা আসবে। আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি বিগত সময়ের মত আগ্রহ নিয়ে মানুষ টিকা গ্রহণ করবেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন ৬০ বছর বয়সীদের বেশি, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীরা। স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী, গর্ভবর্তী নারী এবং দুগ্ধদানকারী মা এবং সম্মুখসারির যোদ্ধা। দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ সফল করতে ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় প্রচারণা শুরু করেছেন সিভিল সার্জনরা।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর