ঝর্ণা বেগম

সম্পত্তিতে জোর করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মোল্যা ভবন নির্মাণকাজ শুরু ও প্রাণনাশের হুমকি দিলে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলায় ওই সম্পত্তিতে আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন। মামলার পর থেকে আসামিরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ভয়ে আমি দুই সপ্তাহ ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

বুধবার (১০ মার্চ) সকালে গোপালগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলছিলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের ঝর্ণা বেগম (৫০)।

ঝর্ণা বেগম ওই গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাফ হোসেনের স্ত্রী। জমির দখল ঠেকাতে আদালতে মামলা করে আসামিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। 

তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী বেঁচে নেই। আমার দুটি ছেলে। তারা চাকরি করেন। আমি বাড়িতে একা থাকি। এ সুযোগে জমি দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে প্রতিবেশী বাচ্চু মোল্যা ও তার পরিবার। এর আগেও তারা আমাকে মারধর করে। আমি ভয়ে আত্মীয় বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি।’

আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষের লোকেরা বিবদমান সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই নারীর।

জানা গেছে, উপজেলার ঘোনাপাড়া মৌজার বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯ নম্বর খতিয়ানের বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯ দাগের ৩৪ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। জমির দাবিদার ঝর্ণা বেগম ১ মার্চ গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি সম্পত্তি নিয়ে মামলা করেন।

মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্পত্তিতে উভয়পক্ষের প্রবেশ, স্থাপনা নির্মাণসহ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কাশিয়ানী থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাচ্চু মোল্যা লোকজন নিয়ে ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বাচ্চু মোল্যার ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি হুমকি-ধামকির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছুটা কাজ করেছিলাম। পুলিশ এসে বন্ধ করে দেওয়ার পর আমরা আর কাজ করেনি। বিষয়টি এলাকাবাসীকে নিয়ে সামাজিকভাবে সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

কাশিয়ানী সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি। ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি।’ 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাশিয়ানী থানার এএসআই পলক কুমার বারুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে উভয়পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে। তবে কাজ করছিল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। পুনরায় কাজ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লিয়াকত হোসেন লিংকন/এমএসআর