টিউমার অপসারণের পর ঈশিতার ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে

যে বয়সে স্কুলের বারান্দায় বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড় করে বেড়ানোর কথা, সেই বয়সে একটি পায়ের অভাবে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে ঈশিতাকে (১২)। একটি পা না থাকায় শৈশবের আনন্দ আজ তার কাছে নিরানন্দ। 

ঈশিতা রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নুরু মন্ডল পাড়ার রিকশাচালক ঈমান শেখের মেয়ে। স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে সে। আর্থিক সংকটের কারণে ঈশিতার আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। ক্রাচে ভর করে চলছে তার জীবন। 

ঈশিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মের পর স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছিল সে। কিন্তু ১০ বছর বয়সে ঈশিতার ডান পায়ে একটি টিউমার ধরা পড়ে। আর্থিক সংকটের কারণে সময়মতো চিকিৎসা করতে পারেনি তার দরিদ্র বাবা। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শে পরবর্তীতে ঈশিতার পা কেটে ফেলতে হয়। এরপরই শুরু হয় ঈশিতার বেঁচে থাকার সংগ্রাম। 

ক্রাচে ভর দিয়ে চলছে ঈশিতার জীবন

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একটি কৃত্রিম পা লাগালে অনেকটাই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবে সে। কিন্তু একটি কৃত্রিম পায়ের দাম প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা। যা তার পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই জোগাড় করা সম্ভব না। এজন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন ঈশিতার রিকশাচালক বাবা।

ঈশিতা জানায়, হাঁতলে ভর দিয়ে হাঁটতে তার অনেক কষ্ট হয়। মন চায় সবার সঙ্গে হাঁট‌তে, খেল‌তে, স্কু‌লে যেতে। কিন্তু  পাঁয়ের জন্য পারে না।

ঈশিতার বাবা ঈমান শেখ জানান, তার দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। অসুস্থ ঈশিতার চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক দেনা হয়ে গেছে তার। তাতেও কাজ না হওয়ায় বসতবাড়িটা বন্ধক রেখে মেয়ের পায়ের অস্ত্রোপচার করান। এখন তিনি নিঃস্ব। কোনোভাবেই মেয়ের আর চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এ অবস্থায় যদি সমাজের কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি মেয়ের একটি কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে আমার পরিবার চির কৃতজ্ঞ থাকত।

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক নারী সদস্য ও ঈশিতার প্রতিবেশী এলিনা বেগম বলেন, ঈশিতার পরিবার খুবই দরিদ্র। একটি কৃত্রিম পা হলে হয়তো শিশুটি আবার স্কুলে যেতে পারত।

মীর সামসুজ্জামান/এসপি