সংবাদ প্রকাশের পর খাবার জুটলো ৩ নবজাতকের
‘৩ সন্তানের দুধ কিনতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা’ এই শিরোনামে ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে বিভিন্নস্থানের বিত্তবান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলা চেয়ারম্যানের। অনেকেই সহযোগিতার জন্য ওষুধ কেনার নগদ টাকা ও ৩ নবজাতকের ফর্মুলা মিল্ক (বিকল্প দুধ) নিয়ে তাদের বাড়িতে হাজির হন।
সকলের সহযোগিতায় আগামী এক মাসের জন্য ওই তিন নবজাতকের অগ্রিম দুধ জমা হয়েছে বলে জানান তাদের বাবা সুমন হাওলাদার।
বিজ্ঞাপন
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার বাসিন্দা সুমন হাওলাদার পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর প্রাইম ক্লিনিকে তার স্ত্রী এক সঙ্গে ৩ সন্তানের জন্ম দেন। আর তাদের জন্মের পর থেকেই শুরু হয় সুমনের জীবনযুদ্ধ। নবজাতকের চিকিৎসা ও খাবার সংগ্রহ করতে উপার্জনের একমাত্র বাহন অটোরিকশাটিও বিক্রি করে দিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি।
সংবাদ প্রকাশের পর শিশুদের জন্য সহযোগিতা পেয়ে সুমন হাওলাদার বলেন, ঢাকা পোস্টকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার বিষয়টি তুলে ধরায় আমার তিনটি সন্তানের মুখে খাবার জুটেছে। সন্তানদের জন্য আমার ঘরে এখন এক মাসেরও বেশি খাবার মজুদ আছে। বিভিন্ন জনে বিকাশে টাকা পাঠিয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা আমার বাড়িতে এসেছেন এছাড়াও আমাদের উপজেলার চেয়ারম্যান আমার সন্তানদেরকে দেখতে এসেছেন এবং সাহায্য করেছেন। আবার বলেছেন আমাকে নতুন একটি ঘর দেবেন।
বিজ্ঞাপন
ব্যবসায়ী ইমু বলেন, অনলাইনে আমি তিন নবজাতকের খবর জানতে পারি। আমি তাদের জন্য ৫টি ল্যাকটোজেন কিনে দেই। এছাড়াও বলেছি পরবর্তী সময়ে আরও সহযোগিতা করব ওই পরিবারটির জন্য।
পটুয়াখালীবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ-সভাপতি সাবরিনা মেহজাবিন স্বর্ণা বলেন, ঢাকা পোস্ট মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি তিন নবজাতকের কথা। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের জন্য আবেদন জানালে বিভিন্ন বিত্তবানরা আর্থিক সহায়তা করেন। আমরা সেই সহায়তা নিয়ে সুমন হাওলাদের বাড়িতে যাই এবং তার হাতে পৌঁছে দেই। তবে নবজাতকদের বাবা জন্য যদি স্থায়ী কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয় সেটা ওই পরিবারের জন্য সচেয়ে বড় উপকার হবে।
দুমকি উপজেলার চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, এই তিন নবজাতক শিশুর খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি তাদের বাড়িতে যাই এবং খোঁজখবর নেই। ওই শিশুদের আগামী এক মাসের জন্য দুধ কেনার টাকা দিয়ে এসেছি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর খ-বিভাগের ঘর যখন বিতরণ করা হবে তখন এই পরিবারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হবে বলে আমি জানিয়ে এসেছি। যে টাকা দিয়ে এসেছি এই টাকা শেষ হয়ে গেলে আবার আমার অফিসে আসতে বলেছি প্রয়োজনে আমার বেতনের টাকা থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করব।
পটুয়াখালী জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক শিলা রানী দাস বলেন, আমি সুমন হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলেছি, তাকে একটি আবেদন নিয়ে অফিসে আসতে বলেছি। আমাদের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তার জন্য সহযোগিতা করব।
মাহমুদ হাসান রায়হান/আরকে