চুয়াডাঙ্গা সদরের ট্যাংরামারিতে রাতের আঁধারে খেজুর রস চুরি করে খেতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে তিন কিশোর। ডাকাত সন্দেহ তাদের পিটুনি দেয় গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদরের মোমিনপুর ইউনিয়নের ট্যাংরামারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা শহরের ইসলামপাড়ার লালনের ছেলে প্রীতম (১৪), জিনতলাপাড়ার মিনার ছেলে আমান (১৭) ও একই এলাকার শাহিনের ছেলে পারভেজ (১৬)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শীত মৌসুমে গাছিরা খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড় বা পাটালি তৈরি করে উপার্জন করে গাছিরা। কিন্তু রাতের আঁধারে অনেকে এসে চুরি করে রস খেয়ে যায়। পাহারা দিলেও একসঙ্গে অনেক লোক থাকায় উল্টো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় গাছিদের। আবার অনেক সময় রস খেয়ে হাঁড়ি ভেঙে চলে যায়। 

গতকাল রাতে এক দল ছেলেকে মাঠে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী ডাকাত ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং একসঙ্গে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় সবাই পালাতে পারলেও তিন জন ধরা পড়ে। তাদেরকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। 

আহত প্রীতমের বাবা লালন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে শহরের ইসলামপাড়ায় ওয়াজ শোনার কথা বলে বের হয় প্রীতম। ওয়াজে না গিয়ে ১৫-২০ জন মিলে ট্যাংরামারিতে খেজুর রস চুরি করে খেতে যায়। এ সময় গ্রামবাসী ধাওয়া করলে সবাই পালালেও আমার ছেলেসহ তিন জন ধরা পড়ে। তাদেরকে ব্যাপক মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে নেয়। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে তিন কিশোরকে হাসপাতাকে নিয়ে আসেন পুলিশ সদস্যরা। তাদের শরীরের অধিকাংশ স্থানেই আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তাদেরকে খেজুর রস চুরি করার সময় হাতেনাতে আটক করে সামান্য মারধর করে গ্রামবাসী। চিকিৎসা শেষে তাদেরকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। 

আফজালুল হক/আরকে/আরএআর