কুলিয়ারচরের আ.লীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হান

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে মদের বিষক্রিয়ায় নিহত আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ তিনজনের পাকস্থলীতে ‘অ্যালকোহল’ পেয়েছে মেডিকেল বোর্ড। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নিহত তিনজনের মরদেহ কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

পাকস্থলীতে ‘অ্যালকোহল’-এর অস্তিত্ব পাওয়া তিনজন হলেন- কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (৫৭) ও জহির রায়হান জর্জ (৫৯) এবং চায়ের দোকানদার লিটন মিয়া (৪৮)। এ ঘটনায় নিহত অন্য দুইজন হলেন- হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাস (৪৫) ও গাড়িচালক শাহজাহান মিয়া (৫২)। এর মধ্যে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শাহজাহান মিয়ার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আর হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাসের মরদেহ এখনো বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রাখা আছে।

ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার মাকসুদর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যদের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন ডাক্তার সোহাগ ও ডাক্তার রোম্মন। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ময়নাতদন্তে অংশ নেন। ময়নাতদন্তের সময় তাদের পাকস্থলীতে অ্যালকোহল-এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত মদ্যপান বা অ্যালকোহলজাতীয় তরল পদার্থ খেয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জেলার কুলিয়ারচর পৌরসভার বড়খাঁরচর এলাকার উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও জহির রায়হান জর্জ এবং কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ১২/১৩ জন নেশাজাতীয় কিছু খেয়ে বাড়িতে আসার পর থেকে তারা একে একে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদের মধ্যে রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে গাড়িচালক শাহজাহান মিয়া, সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে গিয়াস উদ্দিন গিয়াস, হোমিও চিকিৎসক গোবিন্দ বিশ্বাস এবং দুপুরে চায়ের দোকানদার লিটন মিয়া বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আর সোমবার ভোরে জহির রায়হান জর্জকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব। এছাড়াও জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৭ জন।

কুলিয়ারচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তাফা জানান, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। তবে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ নিয়ে মামলা রুজু করতে থানায় আসেননি।

এসকে রাসেল/এমজেইউ