নাইমাকে ল্যাপটপ দিলেন জেলা প্রশাসক
ফরিদপুরের সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমা সুলতানা পাখিকে (২২) এসার কোর আই-৫ মডেলের একটি ল্যাপটপ প্রদান করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাইমাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তার পড়াশোনার কাজে সহায়তার জন্য ল্যাপটপটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
ল্যাপটপ পেয়ে নাইমা সুলতানা পাখি বলেন, আমি আকার আকৃতির দিক দিয়ে অন্য মানুষের চেয়ে অস্বাভাবিক। তবে এই সমাজের মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, যে সম্মান দেখিয়েছে এটা ভোলার মতো নয়। আজকে জেলা প্রশাসক আমাকে ল্যাপটপ দিয়েছেন। এই ল্যাপটপ আমার স্বপ্নপূরণের সারথী হবে বলে আমি মনে করি। আমি স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা চাই।
নাইমার মা শাহিদা বেগম বলেন, জেলা প্রশাসকের দেওয়া ল্যাপটপ অনেক দামি। নাইমার একটা ল্যাপটপের দরকার ছিল। এটি উপহার হিসেবে পাওয়ায় আমার ওপর চাপ অনেকটা কমে গেল।
বিজ্ঞাপন
সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, নাইমাকে আমরা হোস্টেলে ফ্রি খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এছাড়া আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি অদম্য নাইমার পড়াশোনার কাজে একটি কম্পিউটার দরকার। সেই ভাবনা থেকেই তাকে একটি ল্যাপটপ তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার প্রয়োজনে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, নাইমার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বললে জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা থেকে একটি ল্যাপটপ কিনে এনে নাইমার হাতে তুলে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই অদম্য নাইমার এগিয়ে যাওয়ার পথে কোনো বাধাই না আসুক। তার আপন গতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগী হিসেবে থাকবে ফরিদপুরের প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, নাইমা সুলতানা ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষা শেষ করেছেন। তবে তিনি সমাজের আর দশজন নারীর মতো স্বাভাবিক আকৃতির নন। তিনি খর্বকায়। উচ্চতা মাত্র দুই ফুট ৫ ইঞ্চি। ওজন ২০ কেজি।
ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের উলুকান্দা গ্রামের নাদের মাতুব্বর ও সাহিদা বেগম দম্পতির মেয়ের নাইমা সুলতানা পাখি। নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়েও পড়াশোনা করছেন তিনি। পড়াশোনা শেষ করে হতে চান সরকারি কর্মকর্তা। তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মেঝো বোন হাফসা আক্তার (২০) ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় অবস্থিত ফরিদপুর ডায়াবেটিকস অ্যাসোসিয়েশন হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করছেন। আর ছোটবোন সামিয়া আক্তার (১৫) পড়াশোনা করছে কানাইপুরের পোরদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে।
জহির হোসেন/আরএআর