‘আমার প্রতীক একতারায় সুর উঠেছিল, বাজতে দেওয়া হলো না’
বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু ) ও ৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে একাই দুটি আসনে নির্বাচন করে রেকর্ড গড়া হিরো আলম দুই আসনে পরাজয়ের পর বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার এরুলিয়ায় তার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল প্রত্যাখ্যানের কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
এ সময় হিরো আলম বলেন, উপনির্বাচনের গণসংযোগে আমার প্রতীক একতারা জনগণের মনে সুর তুলেছিল এবং ভোট দিয়ে তার ঠিকই বাজিয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে ফলাফল পরিবর্তন করে একতারা বাজতে দেওয়া হলো না। আমি বিজয়ী হলে স্যার বলে সম্মোধন করতে হবে, সেজন্য আমাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাই বলেছে- আপনি পাস করেছেন। ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন। তারা ভাবে আমি পাস করলে দেশের সম্মান যাবে, অনেকের সম্মান যাবে। অফিসারদের লজ্জা যে হিরো আলমকে স্যার বলে সম্মোধন করতে হবে। আমাকে জিততে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমার এত ভোট গেল কই? ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগের লোকজন বলছে, মশাল জিতে গেছে; এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। আওয়ামী লীগের লোকজনও আমাকে ভোট দিয়েছে। দল নয় আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছে। ওই ভোটগুলো গেল কই? এই ফলাফল আমি মানি না। আজকে সারা বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল হিরো আলমের দিকে। আমার গর্বে বুক ভরে গেছে। আমার মনে হয়েছে আমি প্রধানমন্ত্রীর ভোট করলাম। আমি সবার যে ভালোবাসা পেয়েছি তা কখনো ভুলবো না।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন >>> স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রেকর্ড গড়লেন হিরো আলম
আলোচিত এই ইউটিউবার বলেন, এসব অনিয়মের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেইনি। তবে ফলাফলের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। ১০টি কেন্দ্রের ভোট গণনা বাদ দিয়েই ফলাফল দিয়েছে প্রশাসন। এই কেন্দ্রগুলোতে কতগুলো ভোট পাইলাম তা জানানো হলো না আমাকে।
হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু দেখেছি। কিন্তু ফলাফলের জায়গায় গণ্ডগোল করেছে। ফলাফল পাল্টে দিয়েছে। সদরের ভোট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। লাহেরিপাড়ায় আমার এজেন্ট ঢুকতে দেয়নি। তানসেনের কোনো নাম-গন্ধই ছিল না। তাকে পাস করানো হয়েছে। মহাজোটের মশাল মার্কা কোনো কেন্দ্রে ৫০০ ভোট পেলে আমি ২৮ ভোট পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শহরের মধ্যে আমি একটু আশঙ্কায় ছিলাম। এই কারণে বাসায় সংবাদ সম্মেলন করছি।
২০২৪ সালে নির্বাচন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, উপনির্বাচনের মতো পরিবেশ থাকলে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা থাকবে না। আমি চাই ভোট সুষ্ঠু হোক। যাতে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জেতাতে পারে। এভাবে প্রহসনের নির্বাচন হলে স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী আর নির্বাচন করতে আসবে না। নির্বাচন থেকে সাধারণ প্রার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে।
এদিকে বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। মশাল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের একতারা প্রতীকে পড়েছে ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। রাত সাড়ে ৮টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ওই আসনের মোট ১১২টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করেন।
এর আগে ওই আসনে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে মোট ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই আসনে ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোট দিয়েছেন। যা শতকরায় ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
আলমগীর হোসেন/আরকে