প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, সড়ক অবরোধ
সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী
রংপুরে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে এ মামলা করেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টা থেকে নগরীর পার্কের মোড়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অটোরিকশা শ্রমিকেরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর শাস্তির দাবিতে ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বিজ্ঞাপন
নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর পুলিশ সেন্টারে (পিটিআই) কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগম রিকশাচালক নাজমুলকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করেছে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর শাপলা চত্বরে অটো রিকশাচালক শ্রমিক লীগ ও দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কনস্টেবল হাসান আলীর আশরতপুর কোর্টপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই রিকশাচালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী। ওই দিনই পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রী সাথীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টায় আসামিদের আদালতে নেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেদুপুর সোয়া ২টার দিকে আসামিদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফজলে ইলাহী খানের আদালতে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল হোসেন রংপুরে আশরতপুর ঈদগাপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হাসান আলীও ওই এলাকার বসবাস করেন। নাজমুল দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর ব্যক্তিগত একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ওই রিকশা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। এক পর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। বুধবার বিকেলে হাসানের ভাড়া বাসায় প্রতিবন্ধী নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারণা চালিয়েছে ওই পুলিশ সদস্য।
এসপি