লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হক মাস্টারকে হত্যার ১৪ বছর পর রায় দিয়েছেন আদালত। এতে আসামি মো. জুয়েলকে (৩৮) মৃত্যুদণ্ড ও মাহবুব মাফুকে (৩৭) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চার আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক আজিজুল হক এ রায় দেন।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে দণ্ডপ্রাপ্তরা পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সেবাগ্রামের ফারুক হাওলাদারের ছেলে এবং মাহবুব একই গ্রামের মৃত মানিক হাওলাদারের ছেলে। খালাস প্রাপ্তরা হলেন- আলাউদ্দিন, আবদুল্লাহ, স্বপন ও মাকছুদ হাওলাদার।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা জবিউল হক আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সেবাগ্রামের হাজী আবদুল কাদেরের ছেলে। আসামিদের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। আসামিরা ২০০৯ সালের ২৩ জুন দুপুরে ওই জমি থেকে মাটি কাটছিল। এ সময় বাধা দেওয়ায় প্রতিবেশী আলাউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে অভিযুক্তরা জবিউল হকের মাথায় কাঠ দিয়ে আঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় জবিউল হকের ভাই হাজী নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে আলাউদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নামে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১১ সালের ২১ মে লক্ষ্মীপুর সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক বশির আহাম্মদ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে তিনি মামলার প্রধান আসামি আলাউদ্দিনসহ আবদুল্লাহ, মাহবুব, স্বপন, জুয়েল ও মাকসুদ হাওলাদারকে অভিযুক্ত করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত এ রায় দেন।

মামলার বাদী নুরুল ইসলাম এ রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, হত্যার নির্দেশদাতা আলাউদ্দিন খালাস পেয়েছে। আমরা তার খালাসের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমজেইউ