মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সালিসি বৈঠকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে বৃদ্ধ দম্পতি ও তাদের সন্তানের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

থানায় লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব শত্রুতার জেরে কুকুটিয়া ইউনিয়নের টুনিয়া মান্দ্রা গ্রামের ফজল হক (৭২) ও তার স্ত্রী জবেদা বেগমকে (৬৫) একই গ্রামের নুরুল ব্যাপারী (৫৫) তার লোকজনসহ মারধর করেন। এ বিষয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে নুরুল ব্যাপারী গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফজল হককে হুমকি দিলে তিনি শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ফজল হকের পরিবারকে কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য তপন হোসেন মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেয়। সেখানে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলা শেষ হলে ফজল হক, তার স্ত্রী জবেদা বেগম ও ছেলে জাবেদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত জবেদা বেগমের মাথায় ৬টি সেলাই দিতে হয়।

ফজল হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে রুম থেকে বের হতেই কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, ড্রেজার সিরাজ, নুরুল ব্যাপারী ও জাহাঙ্গীরসহ ৪০/৪৫ জন আমদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে। এ সময় আমার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমার ছেলে জাবেদ ও আমাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। আমি বিচার চাই।

এ বিষয়ে কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তপন হোসেন বলেন, দুই গ্রুপের পুরোনো মামলা ছিল। সেটি সমাধানের জন্য চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু আমাকে বললে আমি তাদের ডেকে নিয়ে আসি। সেখানে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা শেষে তারা বের হয়ে গেলে কে বা কারা তাদের ওপর হামলা করেছে এটা তারাই বলতে পারবে।

কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু সাংবাদিকদের বলেন, আজকে সালিস ছিল না। তবে তাদের সালিসের বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। কথা শেষ করে আমি গাড়িতে উঠে যাওয়ার পরে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আমি বিষয়টি জানার পর সেখানে ইউপি সদস্যদের পাঠিয়েছি।

এ ব্যাপারে কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জবেদা বেগম নামের মহিলা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। তিনি শুধু মানুষের সঙ্গে ঝগড়া করেন। কিছু দিন আগে একটি ঝগড়ার বিষয় নিয়ে দুপক্ষের মারামারি ও মামলা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান তাদের পরিষদে ডেকে এনে আপসের কথা বললে তারা রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান তাদের পরিষদ থেকে চলে যেতে বলেন। পরে আমি ও চেয়ারম্যান চলে গেলে সেখানে ওই মহিলার ছেলে জাবেদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। সেসময় আমি ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিলাম। তাছাড়া বিদ্যুৎ ছিল না, তাই তাদেরকে কে বা কারা মারধর করেছে আমি দেখতে পাইনি। শুনেছি মহিলা মামলায় জেতার জন্য নিজেই নিজের মাথা দেয়ালে ঠুকে ফাটিয়েছে।

শ্রীনগর থানা পুলিশের অফিসার ইনাচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সালিসি বৈঠকে নারীকে মারধরের ঘটনায় দ্রুত মামলা নেওয়া হচ্ছে।

ব.ম শামীম/এমজেইউ