বরিশাল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল

বরিশালে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মানিক কারিকর নামের এক ব্যক্তি।

হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক ইসতিয়াক আহমেদ ও সার্জন চিকিৎসক এমএস রহমান সুমনকে আসামি করে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দেন তিনি।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে এজাহারটি মামলা হিসেবে নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম। 

ওসি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন রোগী। তথ্যের সত্যতার ভিত্তিতে মামলা নেয়া হয়েছে।

মামলার বাদী ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের তিমিরকাঠি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মানিক কারিকর।

তিনি বলেন, হার্নিয়া রােগে আক্রান্ত হয়ে ২২ নভেম্বর বরিশালের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ১০৪ নম্বর কক্ষে চিকিৎসক এমএস রহমান সুমনের কাছে যাই।

তিনি বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে আমার হার্নিয়ার অপারেশন করতে হবে বলে জানান। ওই দিন ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন প্যাডে তিনি লিখে দেন (Left Sided Injury Hernni)। আমি তার পরামর্শ অনুযায়ী ১৭ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি হই। তিনি সন্ধ্যা ৭টায় হাসপাতালের ১ নম্বর ভবনের দোতলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ইনজেকশন দিয়ে আমাকে অজ্ঞান করেন। জ্ঞান ফেরার পর কেবিনে শুয়ে অনুধাবন করি আমার বাঁ পাশে অপারেশনের কথা লিখলেও ডান পাশে অপারেশন করেছেন চিকিৎসক। 

এ নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে রাজি হননি। উল্টো হাসপাতালে ভর্তির কাগজপত্র নিয়ে যান চিকিৎসক। কিছুক্ষণ পর আগের প্রেসক্রিপশন বদলে নতুন প্রেসক্রিপশন দেন। এতে লিখে দেন ডান পাশে হার্নিয়া। বিষয়টি হাসপাতালের সুপার ইসতিয়াক আহমেদকে জানাতে গেলে তিনি আমার কথা শোনেননি। এজন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি চাই- এদের মতো চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় আর যেন কোনো মানুষের অঙ্গহানি না হয়। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত চিকিৎসক ও হাসপাতাল সুপারের বক্তব্য নিয়েছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তারা ভুল অপারেশন করেছেন। এখন মামলার তদন্ত চলছে। মামলার দ্রুত চার্জশিট দেব।

এর আগেও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ছিল। ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যুও হয়েছিল। সর্বশেষ বাঁ পাশে হার্নিয়া হলেও ডান পাশে অপারেশন করেছেন এই হাসপাতালের চিকিৎসক।

এএম