পাঁচ দফা দাবি নিয়ে জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন পালিত
কবি জীবনানন্দ দাশের বাড়ি পুনরুদ্ধারসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নেমেছে কবি ও সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে জীবনানন্দ দাশের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করেছেন।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন এসব কর্মসূচি পালন করে।
বিজ্ঞাপন
সকাল ৯টায় জীবনানন্দ দাশ মিলনায়তনে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু করে জাতীয় কবিতা পরিষদ ও প্রগতী লেখক সংঘ। এরপর কবির কবিতা পাঠ ও স্বরচিত কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। পরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদ বরিশালের সভাপতি তপংকর চক্রবর্তী। বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজল ঘোষ, নিলু-মনু ট্রাস্ট ও পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি নজরুল হক নিলু, কবি আসমা চৌধুরী, কবি অপূর্ব গৌতম, ছড়াকার সুভাষ দাস নিতাই, ব্রজমোহন কলেজ বাংলা বিভাগের অধ্যাপক দেবাশীষ হালদার, কবি শোভন কর্মকার কৃষ্ণ, কবি সব্যসাচী সেনগুপ্ত, অধ্যাপক পীষুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি ছোটন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কবি আবদুর রহমান, কবি আবিদ হাসান প্রমুখ। তারা জীবনানন্দের জন্মভিটায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
এদিকে বেলা ১১টায় অশ্বিনী কুমার হলের সামনে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন কবি সৈয়দ মেহেদী হাসান, সংস্কৃতিকর্মী জাহিদ আব্দুল্লাহ রাহাত। এতে একাত্মতা পোষণ করেন নাট্যকার অনন্ত হীরা, কবি দীপঙ্কর চক্রবর্তী, হেনরী স্বপন, বাচিক শিল্পী আজমল হোসেন লাবু, ছাত্র ইউনিয়ন ব্রজমোহন কলেজ শাখার সভাপতি সুজয় সরকারসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, ১৯৪৮ সালে জীবনানন্দ দাশ ভারত চলে গেলেও বগুড়া রোডের (কবি জীবনানন্দ সড়ক) কারো কাছে বিক্রি করে যাননি। অথচ সেই জমি বিভিন্ন ব্যক্তি আইনের ফোকর দিয়ে নিজেদের নামে দলিল করে দখলে নিয়েছেন। সেখানে এখন জীবনানন্দ দাশের কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশে মহান মানুষদের বাড়ি সংরক্ষণ করা হয় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে। অবস্থান কর্মসূচি থেকে জীবনানন্দ দাশের বাড়ি পুনরুদ্ধার করে সেখানে জীবনানন্দ গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন, জীবনানন্দ মিলনায়তন ব্যবহার উপযোগী করা, পাঠাগার নিয়মিত চালু করা, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অপসারণ করা এবং জীবনানন্দ দাশের রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে আবহমান বাংলার পরিবেশে উদ্যান করার দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠন উত্তরণ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী মেলার সমাপ্তি হয় রাতে। সরকারি ব্রজমোহন কলেজের মূল ভবনের সামনে আয়োজিত মেলার সমাপনী দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
উত্তরণের সভাপতি শাকিল আহমেদ বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও আমরা সফলভাবে তিন দিনের মেলা শেষ করেছি। মেলায় মানুষের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। এছাড়া আমরা মেয়রের কাছে ক্যাম্পাসে জীবনানন্দ দাশের একটি ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে কবি সৈয়দ মেহেদী হাসানের উদ্যোগে শুরু হয় উত্তরণ আয়োজিত জীবনানন্দ মেলা।
/এসএসএইচ/