নরসিংদী সদর হাসপাতালে আহত একজনের শরীর থেকে এসব টেঁটা বের করেন চিকিৎসকরা

নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকা ছাড়ার ১ মাস পর বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) রাতে বাড়িতে ফেরা ঘুমন্ত প্রতিপক্ষের ওপর টেঁটা হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবার (১৯ মার্চ) সদর উপজেলার চরদিঘলদি ইউনিয়নের চরদিঘলদি গ্রামে সকাল ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবু মনসুরের (আওয়ামী লীগের অপর গ্রুপ) বিরোধ চলে আসছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান মনসুরের কিছু লোক এলাকার বাইরে চলে যায়।

এক মাস পর বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) রাতে তারা বাড়িতে ফিরলে আজ সকালে আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলীর সমর্থকরা চেয়ারম্যান মনসুরের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করেন। এ সময় হামলাকারীরা টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল। 

হামলায় একই গ্রুপের ৩ জন টেঁটাবিদ্ধ হন। এ সময় আরও ২ জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের নরসিংদী সদর ও পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এই ঘটনায় টেঁটাবিদ্ধ দুইজনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন হযরত আলীর ছেলে মো. ইউনুস (২১) ও নাসির মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (৩০)। অজ্ঞাত পরিচয় অপর টেঁটাবিদ্ধ ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদিকে আহত দুইজনকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।

নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন টেঁটাবিদ্ধ ইউনুস মিয়া। তিনি বলেন, গত মাসের ১৭ তারিখে আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলীর সমর্থকদের সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরমধ্যে সব স্বাভাবিক হলেও আজ সকালে শতাধিক মানুষ অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে।

এলাকাবাসী জাফর আলী (৬০) নামে একজন জানান, দুই পক্ষের মধ্যে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন সমস্যা চলছিল। এরমধ্যে আজ সকালে এই হামলা হয়। এলাকাবাসী কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা হামলা করে চলে যায়।

কিছুদিন ধরেই জমিসংক্রান্ত বিরোধসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমাদের সমর্থকদের বিরোধ চলছিল। যার ফলে আমার অনেক সমর্থক এলাকার বাইরে ছিল। বৃহস্পতিবার তারা সবাই বাড়িতে ফিরলে সকালে শওকত আলীর সমর্থকরা হঠাৎ করে হামলা চালায়।

আবু মনসুর, ইউপি চেয়ারম্যান

এ বিষয়ে কথা হয় শওকত আলীর সঙ্গে। তিনি এসব ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, হামলার সঙ্গে আমরা জড়িত নই। চেয়ারম্যানও আমাদের সঙ্গে কখনো কোনো ঝামেলা করেনি। এখানে তৃতীয় একটি পক্ষ নিজেরা নিজেরা মারামারি করে আমাদের ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে।

মাধবদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তানভির আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। এরমধ্যে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

রাকিবুল ইসলাম/এমএসআর