ইউপি নির্বাচন ঘিরে শরণখোলায় সংঘর্ষ, আহত ৪২
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন আহতরা
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটের শরণখোলায় ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পৃথক দুটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নারীসহ কমপক্ষে ৪২ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, শুক্রবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টায় শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের সভায় হামলা চালান বর্তমান ইউপি সদস্য ডালিমের সমর্থকরা। এতে ৪ নারীসহ ২২ জন আহত হন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে দুপুর ১২টায় একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী আল আমিন খানের মিছিল থেকে বর্তমান সদস্য সাইফুল ইসলাম হালিমের সমর্থকদের ওপর ইট নিক্ষেপ করা হয়। পরে এ নিয়ে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ৭ নারীসহ ২০ জন আহত হন।
আহতদের শরণখোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণখোলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
সদস্য প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি আমার সমর্থকদের নিয়ে উত্তর সোনাতলা গ্রামের আনোয়ারের দোকানে চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় ডালিম মেম্বারের নেতৃত্বে অন্তত ৪০ জনের একটি বাহিনী লাঠি নিয়ে আমার লোকজনের ওপর হামলা করে।
তিনি আরও বলেন, হামলায় ১৭ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। আহতদের শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। এরমধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন চিকিৎসকরা।
জাহাঙ্গীরের অভিযোগ অস্বীকার করে বর্তমান ইউপি সদস্য ডালিম বলেন, সদস্য প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের লোকজন বিনা কারণে আমার লোকদের ওপর হামলা করে। এতে আমার অন্তত ৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। এর আগেও আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন আমাকে হুমকি দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি থানায়ও অভিযোগ দিয়েছি।
ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম হালিম বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আল আমিন খান ও তার ভাই বেল্লাল খানের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে এসে বাড়িতে ঢুকে আমার লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে ৮ নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হালিমের অভিযোগ অস্বীকার করে আল আমিন খান বলেন, আমি মিছিল নিয়ে হালিমের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে তার কিছু নারী সমর্থক পেছন দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার অন্তত ৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রিয় গোপাল বলেন, সকাল থেকেও ধাপে ধাপে হাসপাতালে মারামারির ঘটনায় আহতরা এসেছেন। এদের মধ্যে আমরা ২৩ জনকে ভর্তি করেছি। ৩ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া জরুরি বিভাগে ৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
শরণখোলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।
তানজীম আহমেদ/এমএসআর