লাশ নড়ে ওঠার গুজবে হাসপাতালে ভাঙচুর স্বজনদের
লাশ নড়েচড়ে ওঠার অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন স্বজনেরা
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া এক শিশুর লাশ নড়েচড়ে ওঠার অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন স্বজনেরা।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ চরপাড়া গ্রামের হারুন আলীর ছেলে হামিম আলী (৮) নদীতে গোসলে নেমে ডুবে যায়। গুরুতর অবস্থায় হামিমকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আনেন স্বজনেরা। তখন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর শিশুর মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর রোগীর স্বজনেরা দাবি করেন হামিম বেঁচে আছে, তার হাত-পা নড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে মর্গ থেকে মরদেহ আবার জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পুনরায় দেখে হামিম মারা গেছে বলে স্বজনদের জানিয়ে দেন চিকিৎসক।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় হামিম মারা গেছে অভিযোগ তুলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষে হামলা চালান স্বজনেরা। এ সময় চিকিৎসকের কক্ষের কাচের দরজা ভাঙচুর করেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
হামিমের বাবা হারুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলেকে জরুরি বিভাগে আনার পর চিকিৎসকেরা তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেননি। এজন্য মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকেরা দায়ী। চিকিৎসকরা ঠিকমতো চিকিৎসা দিলে তার মৃত্যু হতো না।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইফতেখার হোসেন বলেন, স্বজনদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভালোভাবে রোগীকে দেখে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। লাশ নড়েচড়ে ওঠার গুজবে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পানিতে ডুবে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। মৃত শিশুকে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজু আহমেদ/এএম