ঈদে বাড়ি ফেরা হলো না দুই বন্ধুর, বাড়িতে চলছে মাতম
ছোটবেলা থেকেই পিয়াস ও পাভেল খুব ভালো বন্ধু। দুই মাস আগে তারা পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে গাজীপুরে কনস্ট্রাকশনের কাজে যান। মুঠোফোনে পরিবারকে জানান ঈদে বাড়ি ফিরবেন। পরিবারের কার কী লাগবে? অথচ আর ফেরা হলো না। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু হয়েছে পিয়াস ও পাভেলের। এখন তাদের কফিনবন্দি মরদেহের অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চর কচ্চপিয়া এলাকায় নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পিয়াস ও পাভেলের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন স্বজনরা। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন পিয়াস ও পাভেলের মা-বাবা।
বিজ্ঞাপন
নিহত সাদ্দাম হোসেন পাভেল (১৯) উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের চর কচ্চপিয়া এলাকার বেলাল সওদাগর বাড়ির বেলাল সওদাগরের ছেলে এবং মোহাম্মদ পিয়াস (২০) একই এলাকার জাকির কোম্পানী বাড়ীর আজাদ হোসেনের ছেলে।
পাভেলের বাবা বেলাল সওদাগর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাপরে আমার কাছে ফিরাই দেন। ও আমারে কইসে ঈদে বাড়ি আইবো। বেতনের টাকা দিয়ে অনেক কিছু আনবো। আমার কোনো কিছুই লাগবে না। শুধু বাপেরে আইনা দেন।
বিজ্ঞাপন
চরফকিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জায়দল হক কচি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলেগুলো খুব ভালো ছিল। এটি খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা। জীবন ও জীবিকার সন্ধানে গিয়ে এমন মৃত্যুর সংবাদে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভুঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাদের মরদেহ আজ রাত ১০টার দিকে বাড়িতে আসতে পারে। পারিবারিকভাবেই মরদেহ দাফনের কাজ সম্পন্ন হবে। ঈদের আগে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু দুটি পরিবারসহ আমাদের সকলকে শোকাহত করেছে। আমি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকার আরমাদা স্পিনিং মিলস লিমিটেডের বহুতল ভবনে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে পিয়াস ও পাভেলসহ তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
হাসিব আল আমিন/আরএআর