পরিবারের সামনে নির্যাতন করে যুবদল নেতাকে হত্যা
নিহত যুবদল নেতা মাহাবুব
নারায়ণগঞ্জে পাওনা টাকা আদায়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে এক যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, হাজারো অনুনয় করে প্রাণভিক্ষা চাইলেও উল্টো পরিবারের সদস্যদের সামনেই চোখ উপড়ে ফেলা হয়। এর আগে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের সিংরাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবদল নেতা মাহাবুব ওই গ্রামের আব্দুল হানিফের ছেলে। তিনি দুপ্তারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। যুবদল নেতা মাহাবুব হত্যায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে আড়াইহাজার থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- কিসমত মিয়া ও মো. কামাল।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে একই ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাশমত মিয়ার সঙ্গে যুবদল নেতা মাহাবুবের একটি জমি বিক্রির বায়না হয়। সে সময় মাহাবুব হাশমতের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা বায়না বাবদ নেন। এরপর বেশ কিছু দিন ধরে হাশমত সেই জমি নেবেন না জানিয়ে মাহাবুবের কাছে বায়না বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চান। কিন্তু মাহাবুব তার জমি বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করে দেবেন বলে হাশমতের কাছে আরও সময় চান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার তর্ক-বিতর্কের ঘটনাও ঘটে। আজ ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় কালিবাড়ি এলাকা থেকে পূর্বের লেনদেনের জেরে মাহাবুবকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাশমত আলীর নেতৃত্বে একদল লোক সিএনজিচালতি অটোরিকশাযোগে তুলে নিয়ে যান।
নিহতের ভাই মহিবুর বলেন, মাহাবুবকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে হাশমতের বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আমার ভাইকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় আমরা যেভাবেই হোক তাদের টাকা যোগাড় করে দিয়ে দিব বলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করি ও তার প্রাণভিক্ষা চাই। কিন্তু হাশমত ও তার ভাই কিসমতসহ কালাম এবং তার পরিবারের লোকজন নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। তাকে আমাদের সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করার পাশাপাশি হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এ সময় তিনি অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার একটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়। পরে তারা আমার ভাইকে নিয়ে যেতে বলেন। তাকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তায়ই তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাহাবুব হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহ কিসমত ও কামাল নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবার এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আবির শিকদার/এবিএস