চেয়ারম্যান নুরুল আমিন

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিনসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ব্যবসায়ী মো. সেলিম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল চন্দ্রগঞ্জ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাদীর আইনজীবী ইফতেখার ফয়সাল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন আমলে নিয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- শিপন খলিফা, এম সজিব, রিয়াজ হোসেন, কাজী আল-আমিন, মোরশেদ আলম, আনোয়ার হোসেন বাবু, সাইফুল পাটওয়ারী, আমিরুল ইসলাম মিরন, ইসমাইল হোসেন, তাজু ভুঁইয়া, রাকিব হোসেন, আরাফাত হোসেন রিফাত, মো. জয়, মো. রিমন, মো. পিয়াস, মো. সৈকত, মো. শাওন ও অজ্ঞাত পাঁচজন। অভিযুক্তরা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

মামলার বাদী সেলিম চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ব্যবসায়ী। তিনি চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অভিযুক্তরা চন্দ্রগঞ্জ বাজারে সেলিমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় বিচারের জন্য গেলে সেলিমকে ধমক দিয়ে অভিযুক্তদের দাবিকৃত টাকা দিতে বলেন চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। পরে ঘটনাটি স্থানীয় গণ্যমান্যদের জানালে অভিযুক্তরা সেলিমের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারের যাত্রী ছাউনি এলাকায় নুরুল আমিনসহ অভিযুক্তরা সেলিমের পথরোধ করে। এ সময় তাদের দাবিকৃত দুই লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেলিমকে পিটিয়ে আহত করা হয়। একপর্যায়ে গলা টিপে তাকে হত্যার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। এ সময় তার পকেটে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও প্রায় ২৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। ১০ দিনের মধ্যে চাঁদার টাকা না দিলে ও ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তারা সেলিমকে হত্যার পর মরদেহ গুমের হুমকি দেয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, সেলিম সিএনজি থেকে চাঁদা তোলে। তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। মামলায় ঘটনার যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে, তখন আমি পরিষদে ছিলাম। আমার কাছে সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে। একটি চক্র সেলিমকে দিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আদালতের নির্দেশনার কপি অফিসে এসেছে কি না জানা নেই। নির্দেশনা কপি হাতে পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমজেইউ