রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার কালীর মোড় এলাকার ভাটি খালের উপর সেতু নির্মাণের কাজ চলছে দুই বছর ধরে। প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে, তবে এখন পর্যন্ত সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়েছে মাত্র ৩০ ভাগ। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। ফলে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পুরোনো ঘুরঘুরিয়া, ঢোলজানি, পারুলিয়া, ভিমনগর, মহারাজপুর, আখশুকনা, সাধুখালী, পূর্ব মৌকুরি, নতুন ঘুরঘুরিয়া, অভয়নগর, বন্যতৈল, আখপোটরা ও জঙ্গল গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সড়কটিতে সেতুর কাজ শুরু হয়। তবে ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে সেতুর কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি। এমনকি, মেয়াদ শেষ হলেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৩০ ভাগ।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং বিল না পাওয়ায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন। ফলে যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি।

স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভাটি খালের উপর ২০২১ সালে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। যার চুক্তিমূল্য ধরা হয় ২ কোটি ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ টাকা। কাজের দায়িত্ব পায় ঝিনাইদহের মদনমোহন পাড়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিটন ট্রেডার্স। মেসার্স লিটন ট্রেডার্সের পক্ষে কাজ করছেন রাজবাড়ীর ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার (রতন) চৌধুরী। সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২১ সালের ১ এপ্রিল। গত বছরের ১ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে, তহবিল সংকটের কারণে গত বছরের জুন মাসে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দশ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে ২০২১ সালে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। সেতু না হওয়ায় শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া উভয় পাশের সংযোগ সড়ক কেটে ফেলায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে সবাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানান তারা।

জঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কল্লোল কুমার বসু বলেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকার পরে কয়েকদিন আগে আবার কাজ শুরু হয়েছে। আমি শ্রমিক বেশি নিয়ে ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ করতে বলেছি। ব্রিজের দুই পাশের রাস্তা কেটে রাখার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। যাতায়াতের জন্য ঠিকাদার একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দিলেও প্রায়ই বাঁশ খুলে যায়। এমনকি, সাঁকো পারাপারের সময় কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। 

ঠিকাদার সঞ্জয় কুমার চৌধুরী বলেন, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া ও বিল না পাওয়ার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। তবে আবার কাজ শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী খন্দকার রাহাত ফেরদৌস ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর ফান্ড ছিল না। এ কারণে কাজ ৯ মাস বন্ধ ছিল। ইতোমধ্যে ফান্ড কিছুটা এসেছে, নির্মাণসামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে। আবার কাজ শুরু হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান/এবিএস