পদ দেওয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি
পদ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা ও নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি খন্দকার আহমেদ শরীফ ডাবলুর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নেতাকর্মীরা।
তাদের অভিযোগ- টাকা ছাড়া কমিটি অনুমোদন করেন না ডাবলু। এছাড়াও তিনি পদ দেওয়ার কথা বলে নারী কেলেঙ্কারিতেও জড়িয়েছেন। মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ বালুমহালের নিয়ন্ত্রকসহ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন পদ দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
চাটমোহর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের ব্যানারে সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এতে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদ্য সাবেক আহ্বায়ক এসএম আব্দুল মান্নান মাস্টার বলেন, প্রথমে আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছেন। সকল যোগ্যতা থাকার পরও শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের অস্তিত্ব রক্ষায় আমি টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। এরপরও সভাপতি পদে আরেক পক্ষ থেকে অনেক বেশি টাকার অফার আছে- এই কথা বলে আমার কাছ থেকে আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় জামায়াত-বিএনপির পরিবার থেকে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতি যোগ দেওয়া মনিরুল ইসলাম মনিকে সভাপতি করা হয়। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মতামতকেও উপেক্ষা করা হয়েছে। ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে চাটমোহরে রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি করতে মনিকে সভাপতি করা হয়েছে। এতে চাটমোহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মী তথা আওয়ামী পরিবারের প্রতিটা সদস্য ক্ষুব্ধ এবং হতাশ।
বিজ্ঞাপন
চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি- ডাবলু ভাই আমাকে পদ দেওয়ার কথা বলেই টাকা নিয়েছেন। অথচ তিনি বলছেন ব্যবসায়িক কাজের জন্য ধার নিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। নিজেকে রক্ষা করার জন্য এমন মিথ্যাচার করছেন। আমি আমার ছেলের মাথায় হাত রেখে বলতে পারি ডাবলু ভাই আমাকে পদ দেওয়ার কথা বলেই টাকা নিয়েছেন। ডাবলু ভাই যদি অস্বীকার করেন তাহলে তার ছেলের মাথায় হাত রেখে বলুক। শুধু আমার কাছ থেকে নয়, ছাইকোল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের কাছ থেকেও পদ দেওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। ডাবলু ভাই টাকা ছাড়া কোনো কমিটি অনুমোদন করেননি।
এসএম আব্দুল মান্নান মাস্টার বলেন, শুধু কমিটি বাণিজ্য নয়, আহমেদ শরীফ ডাবলু যে নারীদের পদ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করেছেন তা আপনাদের প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমেই উঠে এসেছে। নিজের স্বার্থ হাসিল করতে পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগকে ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ বালুমহাল নিয়ন্ত্রকসহ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন পদ দিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কুরুচিপূর্ণ ও কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে কারাভোগ করা ব্যক্তিকেও পাবনা সদর উপজেলা কমিটির পদ দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন। যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নীতি-আদর্শের পরিপন্থি।
সংবাদ সম্মেলনে পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য শাহেদুল ইসলাম নায়েম, চাটমোহর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ বকুল, ছাইকোলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাকিব হাসনাত/আরএআর