জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষ

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও চিকিৎসকরা জানায়, শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের ইকবালপুরে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদের দু’তলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় করিমন বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধা। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর করিমন বেগমের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হাসপাতালের ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে স্বজনরা। রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ স্টাফদের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে ইন্টার্ন চিকিসৎসকরা ঘটনাস্থলে গেলে রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংর্ঘষ বাধে। 

এ সময় হামলায় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক চিরঞ্জিব সরকার, ইন্টার্ন চিকিৎসক হাবিবুল্লাহ, মৃত রোগীর দুই স্বজন শহিদুল ও জিহাদ আহত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আবারও রোগীর স্বজনদের মারধর করে। এতে রোগীর জামাই মো. সাইদুর ইসলাম আহত হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষ

মৃত করিমন বেগমের ভাতিজা শহিদুল অভিযোগ করে জানান, তার চাচী করিমন বেগমকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসক তাকে ভর্তি করে নারী ওয়ার্ডে পাঠানোর পর তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ সময় ওই ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় পুরুষ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অক্সিজেন সরবরাহ ছিল না। পরে অক্সিজেনের অভাবে করিমন বেগমের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে চিকিৎসকরা তাদের ওপর হামলা করে আহত করে। 

জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, জুম্মার নামাজের পর এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজনরা হামলা করেছে-এমন খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে যাই। এ সময় মৃত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তারা আমাদের ওপরও হামলা করে।  

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম খান রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

এসপি