জমি দখলে নিতে ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি পরিবারকে দেয়ালবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে মনিরুজ্জামান মনি নামে দখলকারীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রোববার (৭ মে) ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। বন বিভাগ বলছে, মনিরের বিরুদ্ধে বনের গাছ চুরি ও জমি দখলের অভিযোগে অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে।

মনিরুজ্জামান এলাকায় ‘বনখেকো জংলি’ মনির নামেও পরিচিত। তার বাড়ি ভালুকার হবিরবাড়ি বারশ্রী গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি হবিরবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন।

ভালুকার পাড়াগাঁও গ্রামের ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, গত তিনদিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। মোটরসাইকেলের পার্স ব্যবসায়ী মো. সফিকুল ইসলামের বাবা প্রয়াত আবদুস ছাত্তার আশির দশকে অন্তত ২ একর জমি জেলা প্রশাসন থেকে ভূমিহীন হিসেবে পান। সেই জমিতেই পরিবারের লোকজন বসবাস করছিলেন। 

বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা বন্ধ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন মো. সফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন। গত ৪ মে সকালে মনিরুজ্জামান তার বসতভিটা অবৈধভাবে দখল করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াল তুলে দেন। তারা বাড়ির চারপাশে অবস্থান নিয়ে ওই বাড়ি থেকে বের হলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছেন। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় পানির অভাবে পড়েছে পরিবারটি। বাড়িটিতে অন্য কাউকে প্রবেশও করতে দেওয়া হচ্ছে না। থানায় অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা হয়নি।

সফিকুল ইসলাম জানান, তার বাবার নামে বন্দোবস্ত দেওয়া জমিতে বসবাস করেন। কিন্তু মনির আশপাশে বনের জমি দখলের পর তার জমিও কব্জায় নিতে প্রাচীর তুলে দিয়েছেন।
 
তিনি বলেন, আমার দুধের শিশুসহ চার সন্তান, মা, বোন ও স্ত্রীকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি এর প্রতিকার ও সুষ্ঠু বিচার চাই।’ 

সংবাদ সম্মেলনে নূর মোহম্মদ সিদ্দিকী ও নাঈম সরকার নামে আরও দুইজন ব্যক্তি উপস্থিত হিয়ে নিজেদের জমিও জবরদখল হওয়ার কথা জানান।  

তবে অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান দাবি করে বলেন, ওখানে আমার জমি ছিল, সেটি এনডি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে চলে এসেছি। সীমানা প্রাচীরটি অনেক পুরোনো ও কোম্পানি এখন গেট লাগিয়েছে।

এ ব্যাপারে বন বিভাগের ভালুকা রেঞ্জের কর্মকর্তা হারুন উর রশিদ খান বলেন, মনিরের বিরুদ্ধে ৩০-৩৫টির মতো মামলা আছে। বনের কাঠ চুরি, জমি দখল সংক্রান্ত এসব মামলা। তিনি কী পরিমাণ জমি দখল করেছেন তা বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন করে কোনো জমি তিনি দখল করেননি।

এদিকে শনিবার (৬ মে) বিষয়টি নিয়ে ভালুকা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়।

ভালুকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগটির ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তবে মনিরের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই বলে জানান তিনি।

উবায়দুল হক/কেএ