পটুয়াখালীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৫০
পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত জনসমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। সংঘর্ষে দুই সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২০ মে) সকাল ১০টার দিকে শহরের কলেজ রোড থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও তিনটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে দুই পক্ষই দাবি করছে তাদের একাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় মাইটিভির সাংবাদিক মশিউর রহমান বাবলু ও সময় টিভির ক্যামেরাম্যান সুজন দাশ ইটের আঘাতে আহত হন। অন্য আহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পূর্ব নির্ধারিত জনসভা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার রাতে তিনিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পটুয়াখালী এসে উপস্থিত হন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ থেকেই আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
বিজ্ঞাপন
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেহাংশু সরকার কুট্টি বলেন, এই সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে এবং পুলিশ তাদেরকে সহযোগিতা করেছে এই কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য। পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে করে আমাদের একাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পটুয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরীফ মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মূল দল এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মসূচি শুরু করলেও ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী কর্মী আহত হয়েছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, এই সরকারের আয়ু আর বেশি দিন নেই, আমরা না চাইলেও এই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাদ দেবে। এই সরকার যখন পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে তখন একটা লোকও রাস্তায় থাকবে না, কোথায় পালিয়ে যাবে আপনারা তাদেরকে খুঁজে পাবেন না। আজকে আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। তাদের সমাবেশে আসতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন উপজেলাতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নান বলেন, আজ জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে আসার পথে তাদের ওপর আতর্কিত হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের সাত থেকে আটজন আহত হয়েছেন।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহম্মদ সাজেদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন ছিল। বিএনপির জনসমাবেশ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল। বিএনপি সমাবেশ শুরুও করেছিল। কিন্তু বিএনপির কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মী উত্তেজনা সৃষ্টি করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিনটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
মাহমুদ হাসান রায়হান/আরএআর