দুই কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার জয়ন্ত কুমার মোহন্ত
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে জয়ন্ত কুমার মোহন্ত (৩০) নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহলের কালিরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফুলবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগী এক কিশোরের দাদা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তার জয়ন্ত কুমার মোহন্ত উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং মধ্য পানিমাছ কুটি গ্রামের মৃত দেবেন্দ্রনাথ মোহন্তের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় মাদক ব্যবসা, চুরি ও মারামারির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মধ্য পানিমাছকুটি গ্রামের নিজ বাড়িতে জয়ন্ত দুই কিশোরকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বলাৎকার করেন। নির্যাতনের শিকার ওই দুই কিশোর বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মামলার বাদী বলেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে জয়ন্ত আমার নাতিকে ফোন করে তার চায়ের দোকানে ডাকে। ফোন পেয়ে আমার নাতি চার বন্ধু মিলে উপজেলা সদরস্থ জয়ন্তের চায়ের দোকানে যায়। সেখানে চা-নাস্তা খাওয়ানোর পর জয়ন্ত তাদেরকে কৌশলে অটোরিকশায় উঠিয়ে নিজ বাড়ির এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তিনজনকে বাড়ির পাশের মুদির দোকানে বসিয়ে রেখে গোপন পরামর্শের কথা বলে আমার নাতিকে নিয়ে বাড়িতে ঢোকে। বাড়ির ভেতরে গিয়ে জয়ন্ত আমার নাতির গলায় ছুরি ঠেকিয়ে এবং লাঠি দিয়ে মেরে জোরপূর্বক বলাৎকার করে।
এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাশের রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। এদিকে অনেক সময় অতিবাহিত হলে দোকানে অপেক্ষমাণ আমার নাতির তিন বন্ধু জয়ন্তের বাড়ির দরজায় গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। তখন জয়ন্ত দরজা খুলে তিনজনের একজনকে শার্টের কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে বাড়ির ভেতর নিয়ে গিয়ে একইভাবে বলাৎকার করে। অপর দুইজন ভয়ে পালিয়ে যায়। মারধর ও বলাৎকারে আমার নাতি ও তার বন্ধু অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুর ২টার দিকে জয়ন্ত তাদেরকে ঘটনা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একটি অপরিচিত অটোরিকশায় উঠিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
বাড়িতে ফিরে ভুক্তভোগী দুই কিশোর ভয়ে-লজ্জায় কাউকে কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে থাকে। পরে রাতের বেলা পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসা দুই কিশোরের কাছে ঘটনা শুনে অসুস্থ দুই কিশোরকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
মামলার বাদী বলেন, জয়ন্ত এর আগেও আরেক কিশোরের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। তখন এলাকাবাসী মেরে তার পা ভেঙে দিয়েছিল। আমাদের সন্তানের সঙ্গে সে অন্যায় করেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জয়ন্ত কুমার মোহন্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌকির হাসান তমাল জানান, কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না। এ ঘটনায় তাকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জুয়েল রানা/আরএআর