এক আইনজীবীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এনামুল কবিরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাকে (ডিআইজি) বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। 
 
অভিযোগ- আইজনজীবী পরিচয় পেয়েই রড হাতে পেটাতে শুরু করেন অতিরিক্ত ডিআইজি। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে স্থায়ী বরখাস্তসহ দুই দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছে। 
 
পরে বেলা আড়াইটায় ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয়, আইনজীবী সমিতির সদস্য আশিকুর রহমান তার ভাই মিজানুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে পুলিশের আইজিপি বরাবর একটি অভিযোগ করেন। অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আইনজীবী আশিকুর রহমান। বিষয়টি নিয়ে বুধবার ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) মো. এনামুল কবিরের কার্যালয়ে হাজির হলে অভিযোগ সম্পর্কে শুনানি নেওয়া হয়।
 
ওই সময় অতিরিক্ত ডিআইজি আশিকের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তুই বাকা হয়ে ঘাড় তেড়া করে দাঁড়িয়েছিস কেন? তুই কার সামনে দাঁড়িয়েছিস জানস?- এই কথা বলেই কাছে গিয়ে চড়থাপ্পর দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে আশিক নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে কনস্টেবলের মাধ্যমে রড এনে হাতে ও পায়ে বেধরক পিটিয়ে আহত করে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে আশিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে বৃহস্পতিবার আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগও দেন আশিক। 
 
বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় জেলা আইনজীবী সমিতি এক জরুরি সভা করে। ঘটনার বিস্তারিত পর্যালোচনা করে সভায় আইনজীবী সমতির সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। সভায় সকল আইনজীবী সিদ্ধান্ত নেয় অতিরিক্ত ডিআইজি এনামুল কবীরকে বরখাস্ত করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনজীবী সমিতিকে জানাতে হবে। 
 
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এএইচএম খালেকুজ্জামান, জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর সিনিয়র আইনজীবী মো. কবির উদ্দিন ভূঁইয়া, আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু প্রমুখ।
 
অভিযোগের বিষয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি এনামুল কবির বলেন, পারিবারিক বিরোধ নিয়ে শুনানি ছিল বুধবার। শুনানিতে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমানের মা অভিযোগ করেন যে, তাকে প্রায়ই মারধর করেন ওই আইনজীবী। তখন আশিকুর রহমান কক্ষের ভেতর তার মায়ের সঙ্গে আবারও খারাপ আচরণ করছিলেন। তখন আমি চরম ক্ষুব্ধ হই।
 
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, সে যে কাজ করেছে তা একান্তই তার ব্যক্তিগত দায়। তবে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।
 
উবায়দুল হক/এমএএস