ন্যায্য দাম না পেয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন পিরোজপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানি করা পশুর চামড়া সংরক্ষণ ও বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পিরোজপুরের ব্যবসায়ীরা ন্যায্য দাম না পাওয়াসহ নানা কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পিরোজপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া কিনে লবণ দিয়ে গুদামঘরে রাখছেন। পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে সরবরাহ করছেন সেই চামড়া। এ বছর পিরোজপুর জেলায় প্রায় ৪০ হাজার গরু কোরবানি করা হয়েছে। চামড়া বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে জেলা ব্যবসায়ী সমিতি।
বিজ্ঞাপন
তবে চামড়া ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ন্যায্যমূল্য না পেলে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারা। এছাড়া অল্প দামে চামড়া বিক্রি করেও সময়মতো টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তাদের। আর এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা ব্যবসায়ী সমিতি।
পিরোজপুরের চামড়া ব্যবসায়ী মো. বাদশা হাওলাদার বলেন, আমরা জেলার বিভিন্ন মাদরাসা থেকে এসব চামড়া কিনে সংগ্রহ করি। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ চামড়ার দাম বেশি চায়, তারপর লবণের দামও বেশি। এছাড়া শ্রমিকের খরচও বেড়েছে। যে দেশে লবণ উৎপাদন হয় সেখানে লবণের কেজি ৩০ টাকা হলে আমরা কীভাবে বাঁচব। একটা চামড়ায় ১০ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত লবণ লাগে। গত বছর কোরবানিতে ১ হাজার টাকায় লবণের বস্তা কিনেছি, আর এ বছর সেই লবণের বস্তা ১ হাজার ৫৫০ টাকা। গরু, খাসি এবং ভেড়ার চামড়া যেগুলো সংগ্রহ করেছি সেগুলো নাটোরসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করার ইচ্ছা আছে।
বিজ্ঞাপন
আরেক চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান বলেন, ‘টিভিতে দেখাইছে সরকার নাকি চামড়ার প্রতি ফুট ৪৫ টাকায় কিনছে কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানি কিনে মাত্র ২৫-৩০ টাকায়। বিক্রি না করেও কোনো উপায় নেই, নাহয় চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। বিক্রির পর কোম্পানি ও আড়তদাররা টাকা নিয়ে ঘুরায়। তারা বাড়ি-গাড়ি করে শান্তিতে আরাম আয়েশ করে ঘুমায়। আর ব্যাপারীরা পথের ফকির হয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকিব বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মহোদয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকসহ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা ব্যবসায়ী সমিতিকে নিয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। যারা সার্বক্ষণিকভাবে বিষয়টি মনিটরিং করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাজার ঘুরে দেখেছি। লবণ দিয়ে চামড়া সঠিকভাবেই প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে এবং চামড়াগুলো নষ্ট হয়নি। চামড়া বিক্রির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন যথাযথ দাম তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে পাচ্ছেন না এবং এই টাকা একসঙ্গে তারা দিচ্ছেন না। টাকা নিয়ে ক্রেতারা ঘুরাচ্ছে। এজন্য দিন দিন চামড়ার ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছি এবং সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন তাদেরকেও বিষয়টি অবহিত করবো। যাতে ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করে যথাযথ দাম পান।
আবীর হাসান/এমজেইউ