নওগাঁয় রাজশাহীগামী যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় চার শিশুসহ ২০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের মশরপুর বাইপাস এলাকায় আব্দুল জলিল শিশু পার্কের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহতদের নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকা পোস্টকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমান।

তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ঈদ উপলক্ষ্যে আব্দুল জলিল শিশু পার্কে ঘুরতে এসেছিলেন। পার্কের সামনের সড়কে একটি প্রাইভেট কার ঘোরানোর চেষ্টা করলে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি বাস দ্রুত গতিতে এসে ধাক্কা দেয়। এতে পার্কের গেটে দাঁড়ানো ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাসহ পার্কে আসা দর্শনার্থীদের ঠেলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিশুসহ ২০ জন আহত হলে তাদের প্রথমে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা রোগীদের রাজশাহী ও বগুড়া মেডিকেলে পাঠানো হচ্ছে।

আহতদের মধ্যে শহরের আরজী নওগাঁ মহল্লার কবির হোসেনের ছেলে আহনাফ (১০) ও মেয়ে মিম (২৪), মাস্টারপাড়া মহল্লার রাসেলের ছেলে আনাস (৬০) ও মেয়ে মৌসুমী (২৪) এর পরিচয় জানতে পেরেছে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাকি রোগীদের পরিচয় জানতে পারেননি তারা।

পরিচয়বিহীন এসব রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছে নওগাঁ ব্লাড সার্কেলের স্বেচ্ছাসেবীরা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো, রাজশাহী ও বগুড়ায় পাঠানো, ওষুধ কেনাসহ সব ক্ষেত্রে নিরলসভাবে কাজ করছে সংগঠনটির অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী। তবে ঈদের ছুটিতে চিকিৎসক সংকট থাকায় আশঙ্কাজনক প্রায় সব রোগীকেই রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে অন্যত্র রেফার্ড করে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স খালেদা জেসমিন বলেন, পার্কের সামনে দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত রোগী এসেছিল। এদের মধ্যে অনেকেরই খিঁচুনি ও বমি হচ্ছিল। অনেকের মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাই ওই সব রোগীকে এখানে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আশঙ্কাজনক রোগীদের রাজশাহী ও বগুড়ায় পাঠানো হয়েছে।

নওগাঁ ব্লাড সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবীদের সেখানে পাঠিয়ে পরিচয়বিহীন আহত ১৫ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এর মধ্যে চার শিশুসহ প্রায় প্রত্যেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। শিশুগুলোর নাক, কান দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে রামেকে পাঠিয়েছি। তাদের রক্তের প্রয়োজনে ৪০ জন ডোনার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাজশাহীতেও ভলান্টিয়াররা সজাগ রয়েছে।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফায়সাল বিন আহসান বলেন, আহতদের সর্বশেষ অবস্থা জানতে রাজশাহী ও বগুড়ায় প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাস, প্রাইভেট কার ও তিনটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জব্দ করে পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়েছে। বাসটি শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আরমান হোসেন রুমন/এসএসএইচ/