গত বছর ‌‌এই সময়ে ১০০-১১০টির বেশি ডাব বিক্রি করছি। এবার সব কিছুর দাম বাড়ায় মানুষ আর আগের মতো ডাব খায় না। এখন প্রতিদিন ৩০-৪০টি ডাব বিক্রি হয়। এই সামান্য টাকা দিয়ে সংসার চালানো দায়।

কথাগুলো বলছিলেন ফরিদপুর শহরের নীলটুলি মহল্লার মুজিব সড়কের পাশের ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা আবুল কাশেম মোল্লা। তিনি ফরিদপুর সদরের কৈজুরি ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে বসবাস করেন। স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে তার সংসার। দিন পনেরো আগে বড় মেয়ে প্রিয়া কাশমীর বিয়ে হয়েছে পাশের কানাইপুর ইউনিয়নের গোপালদী গ্রামে।ছেলে আবিদ মোল্লা (১৪) শহরের একটি মাদরাসা থেকে হাফেজি পড়া শেষ করে মাওলানা ক্লাসে ভর্তির অপেক্ষায় আছে। ছোট ছেলে আহাদ মোল্লা (০৬) বাড়ির পাশের বউঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

কাশেম মোল্লা বলেন, আগে অন্যান্য জিনিসের দাম কম ছিল কিন্তু ডাবের দাম ছিল বেশি। এখন অন্যান্য জিনিসের দাম বাড়ছে। তবে সেই তুলনায় কমছে ডাবের দাম। আগে যে ডাব ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করেছি, সেই ডাব এখন ৬০ টাকায় বিক্রি করি। তাও মানুষ কিনতে চায় না।

তিনি বলেন, এখন সংসার চালানোর খরচ বাড়ছে। পোলাপানের বই-খাতার দাম বাড়ছে। এখন আর ডাবের দিকে মানুষ তাকায় কম। মানুষ কম খায় বইলা আমরাও দাম কমায়ছি। তবুও বিক্রি বাড়ছে না।

কাশেম বলেন, আগে পাইকারি একটি ডাব কিনতাম ৪০-৪৫ টাকায়। আর এখন কিনি ৩০-৩৫ টাকায়।

তিনি বলেন, আমার আয় মোটামুটি ভালো। তবে খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা মুশকিল। ছোট ছেলের স্কুল-প্রাইভেট-খাতা-কলম দিয়া দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। আরেক ছেলে মাদরাসা থেকে হাফেজ হয়েছে। তাকে মাওলানা লাইনে পড়াইতেও টাকা খরচ হয়।

আবুল কাশেম বলেন, সালথা ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ঘুরে ঘুরে ডাব কিনে আনা হয়। আগে মানুষের হাতে পয়সা ছিল, খরচও ছিল কম। এজন্য দাম বেশি হলেও কেউ ডাব না কিনে ফিরে যায়নি। অনেকে নিজে দুইটা ডাব খেয়ে পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যেত। এখন আর তেমন হয় না। 

জহির হোসেন/এসপি