রায় শোনানোর সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেলেন আসামি
রংপুরে ফেনসিডিল ও ইয়াবা রাখার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় নারী মাদক কারবারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অপর এক আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নাবিল পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় বাসের মালামাল রাখার লকার থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি ব্যাগ উদ্ধার হয়।
পরে মালামাল রাখা যাত্রীদের ট্যাগ দেখে মাদক কারবারী মাহমুদা আখতারকে আটক করে পুলিশ। মাহমুদা দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার সাজনপুকুর বান্দিপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীকালে তদন্ত শেষে আসামি মাহমুদা আখতারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষির সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামিকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবান সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
এদিকে রায় ঘোষণার আগে আসামি আদালতে হাজিরা দিয়ে উপস্থিত থাকলেও রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যায়।
পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নয়নুর রহমান টফি জানান, আসামি আদালতে হাজিরা দিয়েছিল। কিন্তু রায় ঘোষণার সময় তাকে ডাকাডাকি করেও আর পাওয়া যায়নি। সে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তারের দিন থেকে রায় কার্যকর করে হবে বলে বিচারক আদেশ নামায় উল্লেখ করেছেন।
অপর এক মাদক মামলায় ২৯৩ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে আসামি আজিনুল আলম ভুট্টুকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় আহলে সুন্নাত ফোরকানিয়া মাদরাসা সংলগ্ন কাঁচা রাস্তা থেকে ২৯৩ পিস ইয়াবাসহ আসামি ভুট্টুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাব-১৩ এর পরিদর্শক এস এম সোবহান বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে।
তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলায় ৬ জন সাক্ষির সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি ভুট্টুকে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশি পাহারায় তাকে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নয়নুর রহমান টফি জানান, মাদক মামলায় আসামির সাজা দেবার মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়েছে। আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস