‘আমরা যা লিখি, তার অন্যতম মূল বিষয় হচ্ছে ইগো, মানে আত্ম-অহমিকা। আমরা সবাই লিগ্যাসি রেখে যেতে চাই। আমরা যতই ইগো থেকে দূরে যেতে চাই না কেন, এই আত্ম-অহমিকা যদি কিছুটা না থাকে তাহলে সৃজন সেভাবে সম্ভব হয় না।’

হবিগঞ্জে তৃতীয় মুক্তাঞ্চল সাহিত্য উৎসবে ‘কেন লিখি’ বিষয়ক মতবিনিময়ে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী দীপেন ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রাত ৮টায় হবিগঞ্জ টাউন হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা পর্বে আরও বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহানাজ মুন্নী, কবি সরকার আমিন, কবি জাহান আরা খাতুন, কবি ও কথাসাহিত্যিক নাহিদা আশরাফী, কথাসাহিত্যিক ফাতেমা আবেদীন নাজলা। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক রুমা মোদক।

কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহানাজ মুন্নী বলেন, কেন লিখি এমন প্রশ্নের মুখোমুখি আমি গত ২৫-৩০ বছরে অসংখ্যবার হয়েছি। আসলে মনের ভেতরে তাগিদ না থাকলে লেখা যায় না। নিশ্চয়ই মনে কোনো একটা তাগিদ বয়ে বেড়াচ্ছি। নইলে কেউ তো আমাকে লেখার জন্য জোর করছে না। লেখার পর আমার একটা আনন্দ হয়। সেই আনন্দটা এতই নির্মল ও বিশুদ্ধ একটা আনন্দ যার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

মতবিনিময়ে আলোচকবৃন্দ নিজের লেখালেখির পেছনে ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরলেও সাহিত্যচর্চাকে অনন্য বলে অভিহিত করেছেন। বক্তারা বলেন, সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই মানবসমাজ আলোকিত হয়, মানবতা প্রস্ফুটিত হয়।

চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে তৃতীয়বারের মতো সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করে শিশু-কিশোরদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠন মুক্তাঞ্চল সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র। সকাল ৮টায় পৌর টাউন হলে উৎসবের উদ্বোধনের পর শহরে কবিতার মিছিল বের করা হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, স্বরচিত কবিতা পাঠ ও আলোচনা, শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপিন চন্দ্র পালকে স্মরণ করে তথ্যচিত্র ও ছবি প্রদর্শিত হয়। রাতে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব পালিত হয়।

উৎসবের বিভিন্ন পর্বের আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন কবি তাহমিনা বেগম গিনি, শিশু সংগঠক বাদল রায়, সংগঠক হুমায়ুন কবির সৈকত, কবি সিদ্দিকী হারুন, নাট্যনির্দেশক ইয়াছিন খাঁ, তৃতীয় মুক্তাঞ্চল সাহিত্য উৎসবের সভাপতি মো. মুশফিকুর রহমান (তুহিন), সদস্য সচিব অভিজ্ঞান ধর।

আজহারুল মুরাদ/এমজেইউ