ঝালকাঠিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস পুকুরে
সব মরদেহ বুঝে পেয়েছে স্বজনেরা, অভিযোগের অপেক্ষায় পুলিশ
ঝালকাঠির ছত্রকন্দায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস পুকুরে পড়ে ১৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনো থানায় মামলা হয়নি। নিহতদের স্বজনদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছেন সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার।
রোববার (২৩ জুলাই) সকালে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, হতাহতদের স্বজনরা অভিযোগ দায়ের করবেন আমরা সেই অপেক্ষায় আছি। কেউ দায়ের না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।
বিজ্ঞাপন
তবে স্বজনেরা মরদেহ বুঝে পেয়েছে বলে জানিয়েছে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান সানি ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, রোববার রাতের মধ্যেই ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ৩০ জন আহত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে নিহতদের দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে এক লাখ টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহম্মদ আফরুজুল হক টুটুল ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনাটির কারণ কারো গাফিলতি কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অন্যায়কারীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
ইতোমধ্যে বাস চালক, কন্ট্রাকটর ও হেলপারের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসচালক ও সুপারভাইজার পালিয়ে গেলেও তাদের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
আইজিপি আরও বলেন, বাসের আহত যাত্রী, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আমি সরাসরি কথা বলেছি। তাদের দাবি যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি পুকুরে পড়ে যায়। এছাড়া আরও কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ মামুন শিবলীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (২২ জুলাই) বেলা ১০টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাশার স্মৃতি পরিবহন দুর্ঘটনা কবলিত হলে ১৭ জন নিহত হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়াকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি করতে গিয়ে চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের গভীর পুকুরে পড়ে যায়। গাড়িটি ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে