বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ও এর সংযোগ খালগুলোর কচুরিপানা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে অপসারণ শুরু হয়েছে। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালটিতে আটকে থাকা কচুরিপানা অপসারণে ১০টি জায়গায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। শনিবার সকালে উপজেলার তালতলী এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজের উদ্বোধন করেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলাকে নান্দনিক সাজে সজ্জিত করার লক্ষ্যে রায়েন্দা খাল পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। উপকূলীয় এই এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট রয়েছে। লবণাক্ততার কারণে পানযোগ্য পানির পাশাপাশি নিত্য ব্যবহার্য পানিরও তীব্র সংকট রয়েছে উপজেলাজুড়ে। দীর্ঘদিন ধরে খালের পানি দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে। এতে শিশু ও নারীরা চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া শরণখোলায় গভীর ও অগভীর নলকূপ ফলপ্রসূ নয়। তাই অজু গোসলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে দেখা দেয় চরম পানির সংকট। এ অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন। কচুরিপানা অপসারণে দীর্ঘ এ খালের সৌন্দর্যবর্ধনের সঙ্গে এর পানি স্থানীয়দের ব্যবহার উপযোগী হবে।

স্থানীয় গ্রামগুলোর নারী-পুরুষ, ছাত্র-শিক্ষক, স্কাউট, আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, এনজিও কর্মী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদসহ সর্বস্তরের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এই কচুরিপানা অপসারণ কাজে অংশ নেন।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন,  রায়েন্দা খালটি প্রায় ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ। বদ্ধ এই খালে আটেকে যাওয়া কচুরিপানা এলাকার দুর্ভোগের কারণ হয়েছে। তাই এটা থেকে মুক্তি পেতে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সবাইকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কচুরিপানা অপসারণের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ এ কাজে সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, প্রথম দিনেই কচুরিপানা অপসারণের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হয়েছে‌। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, শরণখোলার ১১৪টি স্কুলের সকল শিক্ষক কচুরিপানা উত্তোলনের এ বিশাল কর্মযজ্ঞে অংশ নেন।

রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমল হোসেন মুক্তা বলেন, উপজেলার অভ্যন্তরীণ ২২ কিলোমিটার খালগুলোতে যেভাবে কচুরিপানা আটকে ছিল তা এলাকাবাসীর জন্য দুর্ভোগে পরিণত হয়েছিল। তাই দলমত নির্বিশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে সবাই একযোগে কচুরিপানা অপসারণে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। তবে এভাবে আর যাতে কচুরিপানা না জমতে পারে সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

শেখ আবু তালেব/এসকেডি