রাজবাড়ীতে ১০ টাকায় ব্যাগভর্তি বাজারের আয়োজন করেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সুবিধাবঞ্চিত, দুস্থ ও অসহায় প্রায় ২০০ পরিবারকে দুই বেলা ভালো খাবার খেতে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নামমাত্র দামে সরবরাহ করতে এ আয়োজন করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাজবাড়ী জেলা শহরের রত্না কমিউনিটি সেন্টারে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনব্যাপী ১০ টাকার বাজারের ব্যবস্থা করা হয়। ১০ টাকার টোকেন নিয়ে অসহায় দুস্থ মানুষেরা নিজের চাহিদা মতো বাজার করেন। প্রতি মাসে এক দিন গরিবের সুপার শপ বসবে বলে জানা গেছে।
 
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী ১০ টাকার এ সুপার শপে পণ্য কেনার কার্যক্রমের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মোরশেদা খাতুন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট খান মো. জহুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে ১০ টাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়,সেখানে ভোজ্যতেল এক লিটার ৪ টাকা, দুই কেজি ওজনের মুরগি ৬ টাকা, এক কেজি চাল ১ টাকা, দেড় হালি ডিম ১ টাকা, একটি লুঙ্গি ১ টাকা, এক জোড়া জুতা ১ টাকা, দুই কেজি আটা ২ টাকা, এক কেজি লবণ ১ টাকা, এক কেজি মসুর ডাল ৩ টাকা, এক কেজি ছোলা ২ টাকা, এক কেজি বুটের ডাল ২ টাকা, এক কেজি আলু ১ টাকা, একটি লাউ ১ টাকা, এক কেজি মিষ্টি কুমড়া ১ টাকা ও পাঁচ প্যাকেট বিস্কুট ১ টাকা।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের তদারকিতে ১০ টাকার বাজারে চলছে অসচ্ছল, বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের কেনাকাটা। মূলত দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টায় প্রতি মাসে একবার এই বাজারের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গরিবের সুপার শপে বাজার করতে আসা মোছা. ফুলবানু, রহম আলী শেখ, নূর আলমসহ কয়েকজন বলেন, ১০ টাকা দিয়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার করলাম। এখানে যে এত কম দামে চাল, ডাল, তেল, ডিম, মুরগি পাওয়া যাবে কখনো চিন্তা করিনি। এ বাজারের ব্যবস্থা করায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি। কেনাকাটা করে মন ভরে খেতে পারবো। আমাদের মতো অনেক মানুষ উপকৃত হলো।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য মোহাম্মাদ জামাল উদ্দিন বলেন, রাজবাড়ীর প্রায় ২ শতাধিক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবার মাত্র ১০ টাকায় যে পণ্যগুলো কিনতে পারবেন তার বাজার দর প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা হলেও তাদের পণ্য বাছাই করে নিজেই কেনার স্বাধীনতা তৈরি করতে এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। 

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. মোরশেদা খাতুন বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এটি একটি প্রশংসনীয় ও মানবিক কাজ। বিভিন্ন দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায়। রাজবাড়ীর সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষের জন্য এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। পাশাপাশি এই ফাউন্ডেশন জেলায় একটি এতিমখানা পরিচালনা করে। যেখানে এতিমরা সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পড়ালেখা করছে। জেলা প্রশাসন তাদের এ ভালো কাজের পাশে আছে।

মীর সামসুজ্জামান/আরএআর